Thursday, July 17, 2014

ক্রমে নেমে আসছে অন্ধকার...
সেই অন্ধকারের ভেতর দিয়ে যাবো, শেষের দিনগুলি অতিক্রম করার সময়ও তুমি সঙ্গী হবে তো, কবিতা ?
ঢেউ ফিরে গেলে এসো তুমি,
উদ্যত তোমার ছুরি, এই বুকে হেনো,

তুমি মৃত্যু, পরাজিতদের কেউ নও,
তোমাকে আশ্রয় মানি, এইটুকু জেনো !
একটি অগ্রন্থিত কবিতা

বিরহ

পাশে বেডটাইম স্টোরি, এশট্রে, সিগারেট, হুইস্কির গ্লাস
পাশে মহাভারত, এজরা পাউণ্ড, দুমড়ানো বালিশ, টেলিফোন
পাশে কলম, একটা ডায়েরি, দু-একটা না লেখা কবিতা
পাশে ঘুমের বড়ি, জলের গ্লাস, স্বপ্নহীন হাতপাখা
পাশে হাতঘড়ি, কাঁটা নেই, চশমা আর, গ্রাফিত্তির বিপাশা বসু

শুধ, তুমি নেই, কেবল নিদ্রাহীন এই রাত্রির হু হু স্তব্ধতা !
না দেখা স্বপ্নের মত সুন্দর তুমি, সন্ধ্যা...
লোকে জানে, বিকেলের অর্ধছায়াপাত,
মনোনিবেশের মত পায়ে চলে এসো,
এই ঘরে !
নক্ষত্র জ্বলুক দেয়ালে দেয়ালে, আর রাত্রি তার কথাকলি নেচে যাক...
নৃশংস শিশুহত্যা !
ইজরায়েলের এই তাণ্ডব থামাতে কোনো রাষ্ট্র এগিয়ে আসছে না !যে গোপন ধর্মযুদ্ধ চলে আসছে পৃথিবী দখলের নামে, এটা তার অ ঙ্গ ! খৃস্টান ভার্সাস মুসলিম !
আমি সামান্য এক লোক, তবু এর প্রতিবাদ করছি !
মার্ক্সসাহেব বুঝেছিলেন, অর্থই মূল ।
ফ্রয়েডসাহেব বুঝেছিলেন, যৌনতাই সার ।
রুশো অনুভব করেছিলেন, মানুষের মুক্তি নেই কোথাও ।
মাও দে জং জেনেছিলেন, বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস ।
রামকৃষ্ণ বুঝেছিলেন, যত মত তত পথ ।
যিশু ত্যাগের মহিমাকেই ভেবেছিলেন সার ।
ভারতীয় ঋষিরা উপলব্ধি করেছিলেন, চরৈবতি । চলাই জীবন ।
মহম্মদের এক হাতে তরবারি, অপর হাতে কল্যাণমুদ্রা ।
গৌতমবুদ্ধ জেনেছিলেন, নির্বানই সার ।
চাষী জানে, কৃষিই জগত । শ্রমিক পিস্টন ।

আর, কবি জানেন, ভালোবাসাই আসল ।

আমি এক মূর্খ পাঠক, এসব কিছুই না জেনে, তাকিয়ে আছি
ভাঙা সেতুটির দিকে !
রাস্তা

ঐ রাস্তা, পদ্মরাগ রঙ যার উপর ঢেলে দিয়ে চলে গেছে কেউ,
মনে হয়, সূর্যাস্ত হবার আগে, পৌঁছে যাবে তোমার কাছে ।
সূর্যাস্ত কোথায় হয়, তুমি জানো ? আমার তো সূর্যোদয় নেই,
সূর্যাস্ত নেই । তবু, ঐ রাস্তা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি তোমার দিকে ।

---গোধূলিরচিত থেকে
সুখে আছে টিয়া পাখিটিও,
কথা কইছে হরেকরকমবা
লাল তার ঠোঁটে তবু কেন
বিষাদচিহ্ন রেখেছে এঁকে ?
না, বলো না, এতদূর এসে ফিরে যাবে ?
না, বলো না, শ্রাবণ আসছে !

এবার ভিজবো, দুজনেই,
দুকূল ছাপিয়ে...
সকলেই আছে সুখে, কেবল সে সুখে নাই ! ভা ঙা লণ্ঠনের আলো এসে পড়ে কৌতুকের মত !
দূর থেকে সে দেখে আমাকে, আমি তাকে
উঁইপোকা কত আর কেটে নিতে পারে নদীর বিষাদ !
ধুলি ও আগুন, আমাকে গ্রহণ করো !
নশ্বরতা, তোমাকে প্রণাম করি আজ !
যারা কথা দেয় অথচ রাখে না, তাদের উজ্জ্বল মুখ আলোকিত করো !

নীল পানপাত্র, মানচিত্র খুলেছি আরেকবার,
সকল পতনচিহ্ন ধরে এগিয়েছি
নিঃশব্দে, তোমার দিকে...
গল্পটা সকলের জানা, তবু মাঝে মাঝে হানা দেয় অপরিচিতের মত, অবয়বহীন না কি মুণ্ডহীন, কণিষ্কের মত সে দাঁড়িয়ে থাকে, কোনো এক পাঠকের অপেক্ষায়, অনাদিকালের পাঠক সে, পাঠোদ্ধার করবে বিবর্ণ অক্ষরগুলি লেহন করতে করতে !

গল্প ও পাঠক থেকে দূরে আমার মূষিকজন্ম ত্রাণশিবিরের ডাল ও লবণে খুঁজে নিচ্ছে পরমার্থ !
না লেখার সুবিধা অনেক !
আমি এখন দিব্যি না লিখে দিন কাটাই ! শুয়ে শুয়ে !
অবসরজীবন ? না কি অর্থহীন জীবন ?
শূন্যের সন্তান আমি, হাত ভরে নিয়েছি সকল শূন্যতা !

না লেখার সুবিধা এই, ভাবতে পারি !
একে একে নিভিছে দেউটি...
কথাটা অনুভব করি ! যাদের আশা ছিল খুব, উচ্চাকা ঙ্খা খুব, তাদের দলে, রিজার্ভ বে ঞ্চে বসার ইচ্ছে ছিলো না কোনোদিন ! সান্নিধ্যপ্রিয়তা কথাটা ভুল না সঠিক, জানি না আজও ! জীবন দুদিন বৈ তো কিছু নয়, জানি বলে, কলম ধরেছিলাম বাজি রেখে ! প্রতিভাহীন, কল্পনাহীন, শিক্ষাহীন, এক লোক আমি ! ভালোবাসাকে ধর্ম মেনে শব্দকে করেছি পূজা !
ই-কারই শক্তি, জেনে, রাত্রির ভজনাও করেছি !
সন্ধ্যাই সত্য, জেনে, আহ্নিকের বদলে মজেছি তার রূপে !
ফলে, একে একে মুছে যাচ্ছে শব্দ, বাক্য, কারক, সন্ধি ও সমাস !
দেউটির মত নিভে যাচ্ছে তারা !
এইডা আমার কথা না !
এইডা তোমার কথাও না !

এইডা ঐ পোলাডার কথা, যে কাইল কাঁঠাল গাছো ফাঁসি দিয়া মইরা গেছে !

ভালা তো বাসছিলাই বালা, তয় তুমি রোজ আইন্ধার রাতো, একা একা, কান্দো ক্যান ?
যাও বাতাস, তারে কইও,ভাটির স্রোত অইছে মেলা ! এবার উজান বাইয়া একবার যেন আইন !
মেলা কাটাকাটি অইছে !ভীমবেটকার গুহা আর কলি ঙ্গ পলাশী গাজা কান্দাহার বাদ নাই !
অহন কাটাকাটি বাদ দিয়া উজান বাওয়ার দিন !
যাও, চাইও, পথো সুন্দরী দেইখ্যা ভুইলা যাইও না ! তোমার মতিগতি তো আবার ভালা না !
যদুবংশ ধ্বংস হয়েছিলো আত্মঘাতী কলহে, মানুষ ধ্বংস হবে পরস্পর হানাহানি করে !
রুখনেওয়ালা কোঈ নেহি !
প্রেম নয়, প্রীতি নয়, সচ্ছ্বলতা নয়,
আর এক বিপন্ন বিষ্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে
খেলা করে
আমাদের ক্লান্ত করে
ক্লান্ত, ক্লান্ত করে !
আমি ভালো নেই !
আমি ভালো নই !

চিত্কার করে বলছি, এই শোনো, আমি ভালো নেই !

কাকে শোনাচ্ছি এ কথা ? কাকে ?
এই পৃথিবীতে কে কার কথা শোনে ?

শ্রাবণ, তুমি কি শুনছো ?
সন্ধ্যা তুমি কি আমাকে গ্রহণ করেছো ?

আমি ভালো নই !
আমি ভালো নেই...

(দয়া করে এটাকে লেখা ভাববেন না, আসলে এটা মনোলগ !)