Friday, August 29, 2014

কোনো যোগ্যতা নেই, বলে, কবিতা লিখতে শুরু করেছিলাম ! হায়, তখন কি জানতাম, এ যে দাবাখেলার চেয়ে কঠিন, এভারেস্ট অভিযানের চেয়ে বিপদসংকুল !
কবিতা দাবি করেছিলো আমার জীবন, দিয়েছি ! দাবি করেছিলো মগ্নতা, মগ্ন হয়ে দেখেছি, কবিতা আসলে পাশের বাড়ির সেই নারী, যাকে জানালা দিয়ে দেখি, ছোঁয়া যায় না !
কবিতাপ্রেমিক হয়েই এ জীবন কেটে গেলো, কবিতাকে স্পর্শ করতে পারলাম কই ?

এ জানলে, আর যাই হোক, এ লাইনে পা দিতাম না !
মরণও যাকে অপছন্দ করে, সে আমিই...তবু, কবিতা, তোমার জন্য এই জীবন...

মনে রেখো...
ঈশ্বর কোথায় থাকেন ?
তার বিরুদ্ধে আমার অনেক নালিশ !

জানি, আমার বিরুদ্ধেও তারও অনেক অভিযোগ আছে !
আমি তার অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছি !

তিনি যদি বিদ্যমান হতেন, আমাকে নিশ্চয় ঘোড়ার সহিস করে পাঠাতেন, এভাবে ফেসবুকার হয়ে জীবন কাটাতে হতো না !
ঘোড়ার সহিস হলে, কবিতাকে বলতাম, চলো, বেরিয়ে পড়ি ! সময়ের ইন্তেকাল দেখে আসি !
নীরব এই রাত্রি একা কাঁদে...
তার অশ্রু, লোকে ভাবে, ভোরের শিশির...
আজ কি বার ?
মনে আসছে না কেন ?
কাল কি মদমত্ত ছিলাম ?
মদ ? সে আজকাল ছেড়ে দিয়েছি !
তাহলে ?
আজ কত তারিখ ? এটা কি সেপ্টেম্বর ? নাকি আশ্বিন ?
সব গুলিয়ে যাচ্ছে কেন ?

এই যে, দাদা, উঠে পড়ুন, আর কত ভ্যানতারা করবেন ! এবার চেম্বার বন্ধ করতে হবে ! রাত হয়ে গেছে !

রাত ? রাত মানে তো জেগে থাকা, অসহ এক নিঃসঙ্গতা নিয়ে !
জেগে থাকি কেন ? আমি কি রাতের পাহারাদার ?

গতজন্ম হাসে, বলে ওঠে, অভিশপ্ত পুরুষ ! আরও তিনজন্ম অভিশাপ জর্জরিত থাকো !
রহস্য থেকেই গেলো, কেবল পাতা উড়ে গেছে কাহিনী থেকে...

রাস্তা পার হতে গিয়ে, দেখি, অন্ধ লোকটির মতো
আমিও দাঁড়িয়ে আছি
আগুনের উপর...

একে কি জীবন বলে ?
ধর্মশাস্ত্র, নিজেই জানে না...

পাতা ঝরে যায় শীতকাল জুড়ে...
জেগে ওঠো প্রাণ...
আয়নার ওপার থেকে এসো
প্রতিবিম্বহীন পায়ে...
বাল্যশিক্ষায় অজ আর আম বলে অক্ষরজ্ঞান ও শব্দজ্ঞান দেওয়া হয়েছে, এই শব্দগুলির অভিধা জানি আমরা, কিন্তু এই শব্দের অন্তর্নিহিত অর্থ কি ?
ক্ষতি কি, যদি হারিয়ে যাই কোনোদিন ?
ক্ষতি কি, যদি আকাশ একদিন নীল না হয়ে তুঁত রঙ হয়ে ওঠে !
গণিতসূত্রগুলি যদি কাজ না করে কোনোদিন,
যদি, নদী তার গতিপথ পালটে উজানে ধাবিত হয়, ক্ষতি কি ?

এতকাল সব সূত্র মেনে, দেখা গেছে, যন্ত্র হয়ে গেছে মানুষ, ব্যাংকসভ্যতা কাছে লাভ-ক্ষতির হিসেব শিখতে শিখতে, মানুষ জেনেছে, অস্ত্রই ক্ষমতার সোপান...
ক্ষতি কি, এই জানা থেকে যদি এক বিপল দূরে সরে থাকতে পারি ?

নিরাপত্তা ভাবি যাকে সে আসলে বাঘের খাঁচা !
আয়না, তুমি কার ?
আয়না হেসে ওঠে, বলে, যে দেখে, তার...

আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখি, পারা উঠে গেছে তার, অস্পষ্ট চেহারা...

আয়না, এ কোনজন ?
নীরব এক হাওয়া বয়ে গেলো, শির শির করে ওঠেদেহকাণ্ড !

আয়না...এ যে আমি নই...এই কঙ্কাল, মুণ্ডুহীন...

এই তুমি, এই তুমি...
জীবনের চাইতে বড় নাটক আর কিছু নেই !
প্রতিটি মুহূর্ত সাসপেন্সে টান টান...
কাল যা ঘটেছে, আজ তার বিপরীতই যদি ঘটে, অবাক হবার কিছু নেই !

আজকাল আমি আর অবাক হই না একারণেই !
না, এই কথাটির তীব্রতা, তার কম্পনা ঙ্কের মাত্রা মূলত প্রতিষ্ঠা করে হ্যাঁ-এর অন্তররূপকেই, ফলে, না বা হ্যাঁ, দুইই এসে দাঁড়িয়েছে গণিতসীমানার বাইরে, যেখানে সংসারসীমা নেই, আছে এক মগ্ননির্জনতা, এই নির্জনতা অন্তরলোকের...
সংজ্ঞাতীত এই সব মূলত উপাসনাজীব্য নয়, কেবল.অনুভবের !
ইট ও বালির কথা লোকে বলে, আসলে গৃহনির্মিত হয় লোভ ও কামনা দিয়ে ! নিরাপত্তা হিসেবে লোহা, মূলত তা স্বপ্ন ! সিমেন্ট ? তা ঐ ভালোবাসা !

আমার কোনো ঘর নেই, ফলে, স্বপ্নও নেই...
আমি শুধু চেয়েছিলাম একটি নদী সারাজীবন থাকুক আমার কাছে, সন্ধ্যা সহ বসে থাকবো তার সান্নিধ্যে...
সন্ধ্যার ঐ কাতরতা টের পাই, নদীর জলে উন্মাদিনীর মতো
ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতার কাটছে, তার খোলা চুলে লেগে আছে সূর্যাস্তের রঙ...
আমি চেয়ে দেখি এই অপরূপ দৃশ্য...বড় মায়া লেগে আছে এই দৃশ্যে...আর একান্ত ভালোবাসাও !
সন্ধ্যা কি আমার কাতরতা অনুভব করে ? কখনও ?
জীবন ? মানে ঐ সাপলুডো খেলা ? ঐ গা ছমছমে অন্ধকার ? খালি ক্লাসরুমের ঐ শূন্যতা ?
না কি, ঐ মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি ? ভোরের আজান ?
বাচ্চাকাচ্চা পয়দা করে ঢেঁকুর তোলা ?
ঘরবাড়ি, ব্যাংকব্যালেন্স ?

জীবন, তুমি জানো তোমার মানে ? মধ্যাহ্ন বা রাত্রি ?
জানো তুমি, কাকে বলে দীর্ঘশ্বাস ? কাকে বলে প্রাপ্তি ?
স্বপ্ন আর বাস্তবের মাঝখানে এক বৈতরণী, যার সর্বগ্রাসী স্রোত আর ঢেউ আছড়ে পড়ছে কূল ছাপিয়ে, এখানেও...
হা হা করে ছুটে আসছে অন্ধকার, আর আমি, ঐ অন্ধকারের ভেতর খুঁজে বেড়াচ্ছি স্বপ্নের নীল হাড়গুলি...

জানি, একদিন, এই বৈতরণী পার হবো, এই হাড়ের নৌকো করে...

ততদিন, হ্যাঁ, ততদিন প্রতীক্ষা করো, স্বপ্নময় দিনগুলি !
সমস্ত পথ জুড়ে আজ শুধু দীর্ঘশ্বাস...
পথে নেমে, ফিরে তাকাতে নেই, কিরণমালা একথা জানে...দ্বিধা-দ্বন্দ্ব জয় করে যেতে হয় এগিয়ে !

অরুণ-বরুণ পারেনি, কিরণমালা পেরেছিলো !
জয় বাবা মহারাজ !
জয় শ্রী শ্রী 108 বাবা মহারাজ ! আপনার কৃপায় আমার অন্তহীন সুখ ! এই দালানবাড়ি, ব্যাংকব্যালেন্স, বেতন ছাড়াই টুপাইস কামাই, এই হাঁকডাক, সকলই আপনার অপার করুণা !
আপনি ঈশ্বরের সাক্ষাত্ এজেন্ট, জানি না, আপনার কমিশন রেট কত ! তবে , মনে হয়, মোটা কমিশনই মেলে ঈশ্বর কোমপানী থেকে !
না হলে ঐ তেল-মাখন চেহারা হবার কথা নয় !
সে যাই হোক, যে কথা বলছিলাম, আপনার কোমপানী কি ইদানীং আরও এজেন্ট নিয়োগ করতে যাচ্ছে ?
যদি করে, আমার এক ক্যাণ্ডিডেট আছে, একটু দেখবেন !
তার জন্য আপনার বামপকেট ভরে দেবো ! না না, এটা জাস্ট ভালোবাসার উপহার !
নিয়তি কেন বাধ্যতে, এই প্রবচনটির মানে এখন টের পাই, শত প্রয়াসেও যখন ভাগ্যের, দরজা থাক, জানালাটা পর্যন্ত খোলে না, যখন দেখি, খলনায়িকার মত নিয়তি হেসে যাচ্ছে নীরবে, টের পাই, এই অন্ধকার ব্যতীত আমার আর আশ্রয় নেই...

অভিশপ্ত এই জীবনের শেষদিনগুলি গিলে খেতে আসছে আমাকে...

ঐ হাঁ...স্থবির ছাগশিশু যেভাবে অজগরের সামনে থাকে, আমিও আছি, হ্যাঁ, ঐ হাঁ-য়ের মুখে !
স্বপ্নতাড়িত আমার জীবন, স্বপ্ন দেখি না, তবু এসে হানা দেয় বারবার ! সে সব স্বপ্নের ইশারা আমাকে আগত বিপদের সংকেত দিয়ে যায়, আগেও দিয়েছে, এখনও দিচ্ছে !
টের পাচ্ছি, এই কয়েকমাসের মধ্যে লাফ মেরে আমার ঘাড়ে চেপে বসবে বিপদ বা বিপর্যয়, অবধারিতের দিকে তাকিয়ে আছি, কোনদিক থেকে আসবে, তা জানি না বলে, এই অসহায় তাকিয়ে থাকা !

আকাশের নীল ফিকে হয়ে গেছে, বলে, তা নীল করে তুলবো, ভাবছিলাম ! হায় ! তা করে ওঠার সময় পাবো তো ?

না কি তার আগেই আমার টুটি চেপে ধরবে সমূহ বিপদ ?
শূন্য মানে শূন্য নয়, সে কখনও কখনও পূর্ণও বটে !

এই কখনও কখনও যে কখন, তা জানি না, বলে, এত জটিলতা !

ঐ পূর্ণ-এর লোভে, পা বাড়িয়েছি শূন্যের দিকে...
একটা প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য সকল লেখা থেমে আছে...
একটা শব্দ...

আমি একা নই, সন্ধ্যাও কাঁদছে আমার সঙ্গে...

রাত নীরব, সকালও ডুবে যাচ্ছে আশ্চর্য এক নৈঃশব্দে...

Monday, August 18, 2014

নিজেকেই কাটি, টুকরো টুকরো করে,
জুড়ে দিই সব, খুঁজি তন্ন তন্ন করে !
দুজনের চাহিদা আলাদা !
জীবন শরীর চায়, মরণ অশরীর !
কতটুকু পথ গেলে স্তব্ধ হবে হৃদয়স্পন্দন ?
কত কথা বলা হলে নীরবতা
হবে ভাস্বর ?

বলো, আমার মরণ !
সামান্য লেখালেখি, এটুকুই আশ্রয়, এটুকুই সান্ত্বনা ! এই নিয়ে বেঁচে আছি এতদিন !
তারপরও যখন দেখি, কেউ কেউ আমার এসব লেখালেখি খুঁজে পড়ছেন, তখন তা মনে হয় এক স্বপ্ন !

আমি তো আর লেখক বা কবি নই !
লেখকদের এসব জলভাত !
কাঠঠোকরাটিকেও দেখি,
খুঁটে খায় কাঠ, তাহলে এই দাঁড়ালো, কাঠেও রয়েছে খাদ্য ও পানীয়গুণ !

এই দেখা সরলতা মাত্র, অংশত বিভ্রম,
সকল দেখার মত বিভ্রমরচিত এই দেখা
কবিকে বিপন্ন করে, ভেতরে ভেতরে
কিছু ঘুণপোকা তাকে খায়,
ফাঁপা, অন্তঃসারহীন দিনগুলি রাতগুলি তাকে
ঘিরে ধরে, নাচে, নেচে যায়...

সে তখন ভাবে, প্রার্থনাও করে, একা
কাঠঠোকরাটি এসে তাকে যেন খুঁটে খায়
বৃক্ষের মতন,
আসলে তো তাকে নয়, ঐ ঘুণপোকাগুলিকে...
পথে পথে ওড়ে ঐ নিশান...
সে নিশানে লেখা নেই নাম

নামে কি বা এসে যায়, না কি,
ঐ নামৈব কেবলম ! কে দেবে উত্তর ?

সকলেই ব্যস্ত আজ আপন লা ঙ্গুল
নিয়ে, সভাঘরে হবে বুঝি

লা ঙ্গুল নাচানো খেলা, যদি
জোটে কোনো অপূর্ব খেতাব !

পথে পথে জয়ধ্বনি, খেতাবদাতার,
ধুলি ওড়ে প্রাপকের মুখে !

নাম যায় মুছে বাসি কাগজের মতো
তবু জানি এই, যে, নামৈব কেবলম...
দিন কাটুক সুখে...
রাত কাটুক সুখে,

একে অপরের পাশে থেকে...
ভালোবেসে...
দেখো, দেখো, আজ আকাশ কাঁদছে ঠিক তোমার মতো !
গতজন্ম, ছায়া রেখে গেছে,
সে ছায়ার ডানা
দেখি, তোমার পিঠের ঐ যে,
দাগ, তিল নয়,
অস্পষ্ট কালির মতো লেগে
আছে রন্ধ্র জুড়ে,

তুমি তো জানো না, এই
বিষাদের কাছে
ঋণ রেখে চলে গেছে উজ্জ্বল সবুজ

তাকে ডাকো, ফিরিয়ে দিও না,
বলো, গতজন্ম,
লেগে আছে ছায়ার মায়ায়...
নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো...
আবার, দুষ্ট গরুর চাইতে শূন্য গোয়াল ভালো...এই দুটি প্রবাদ বাক্য পরস্পর বিরোধী, না কি, পরিপূরক ?
মেরা ভারত মহান, এটা মালুম হয় নেতা ও চামচাদের দেখলেই...
অন্ধকার
@
দুটিই পথ, একটা চলে গেছে রাজফটকের দিকে, অপরটি তোমার দিকে...
কথা
@
একটিও শব্দ নেই
উচ্চারণ নেই

যা আছে, তা ঐ মুখর নীরবতা !
অনেক কেন-র উত্তর দেওয়া যায় না, বুঝে নিতে হয়...
অনেক কথা বলা যায় না, নীরবতা দিয়ে তা প্রকাশ করতে হয়...

এটুকুই জেনেছি আমি...
কাকে ভালোবেসেছিলে তুমি ?
নিজের ছায়াকে ?

সন্ধ্যা আসে কাছে,
বলো, কাকে ভালোবেসেছিলে ?

রক্তাক্ত চুমুর দাগ মুছে না কখনও,
একথা জানো কি তুমি ? না কি

সকল সূত্রের মত চোখের কালিতে
ধরে আছো গতজন্ম প্রেম ?
গলিত স্থবির ব্যা ঙ দু-এক মুহূর্ত ভিক্ষা মাগে
অনুমেয় উষ্ণ অনুরাগে...

এই 'অনুমেয়' শব্দটির অমোঘ শক্তির কথা ভেবে যাচ্ছি...

Do u feel it ?
বিষাদস্পর্শ ব্যতীত মহত্ শিল্প বা সাহিত্য সম্ভব নয়...
বাঁচার তাগিদ আর অনুভব করি না, কথাটির আড়ালে যে আকুলতা প্রাণের, তা মূলত সৃষ্টির প্রাকশর্ত, অনুভূতির আলো জ্বলে উঠলেই, ঐ বাক্যটির অভিমুখ যাবে সরে ! আর এই আলো জ্বালতে পারে ভালোবাসা, হয় তো, একারণেই, কবি হয়ে ওঠেন চিরপ্রেমিক, বিপ্লবী রোমান্টিক !
তারপরও আত্মহত্যা করতে হয়েছে কবিকে...
তাহলে কি আত্মহননের বীজ লুকিয়ে থাকে প্রাণের কুসুমে ?
কাল স্বাধীনতা দিবস !
স্বাধীনতা মানে কি ?
বড় সংশয়, এ নিয়ে ! 67 বছর হয়ে গেলো, এদেশের মানুষ এখনও রয়ে গেলো পরাধীন ! এখনও বণ্ডেড লেবার আছে, এখনও আত্মহত্যা করতে হয় কৃষককে !
এ আমরা কোথায় আছি ?
দলসর্বস্ব না হলে, এদেশের মানুষ বাঁচতে পারে না, বেঘোরে দিতে হয় প্রাণ !

এই কি স্বাধীনতা ?

জনপ্রতিনিধি নামে সৃষ্টি করা হয়েছে এক ধরণের আজব জীব, যাদের ক্রীড়ণক হয়েই বেঁচে থাকতে হয় জনগণকেই...

এই দেশেই নারীনির্যাতন সবচাইতে বেশি, নারীর অধিকারের নামে তাদের উপর বৃদ্ধি হয়েছ আরও নির্যাতন !

এই আমার স্বদেশ !
মাঝে মাঝে ভাবি, একদিন, সবকিছু পালটে যাবে ! একদিন, নিপীড়ণ শব্দটিই থাকবে না এই জগতে আর অভিধানে ! এরকম আরও কিছু শব্দ, এই যেমন, ধর্ষণ, শোষণ, শাসন, অত্যাচার, অহংকার, আধিপত্য বা ঐ পাপপূণ্য, মোক্ষ, অন্ধত্ব কথাগুলি মুছে যাবে চিরতরে !
মানুষ তার মতো করে বাঁচবে, তার মতো করে রচনা করবে তার.আপন জগত !

হায় ! আমার ইচ্ছা কি পূরণ
হবে কোনোদিন ?
কাটামুণ্ডু নাচে আজ অন্ধকার মঞ্চে...
পল্লব ভট্টাচার্য, কবি ও ঔপন্যাসিক, আজ সকালে, হঠাত্, আমাদের ত্রাণশিবিরে এসে, উপস্থিত ! সঙ্গে খোকন সাহা !
আমার মতো ছাপোষা লোকের ঘরে তার আগমন, নিঃসন্দেহে, বিশাল ব্যাপার ! আমি তো যারপরনাই আহ্লাদিত !
পল্লব মানেই নির্ভেজাল আড্ডা ! সে আড্ডা, ততক্ষণে, সাহিত্য থেকে পর্যটনে চলে গেছে, আর আমরা ঊনকোটিতে !
ত্রিপুরার পর্যটন মানচিত্রে ঊনকোটির উল্লেখ থাকলেও এই স্থান নিয়ে তেমন হেলদোল নেই স্থানীয় জনগণ থেকে জনপ্রতিনিধি কারও, এমনকি, পর্যটন নিগম আলো করে বসে থাকা কর্তাব্যক্তিদেরও ন যযৌ অবস্থা !
সপ্তম থেকে নবম শতাব্দীতে গড়ে ওঠা এই ঊনকোটির ভাস্কর্য সমূহ আমাদের গর্ব হয়ে উঠতে পারতো, পারেনি উপেক্ষার কারণে ! এক বিশাল এলাকা জুড়ে, পাহাড়ের গায়ে, কে বা কারা এইসব অসাধারণ ভাস্কর্য গড়ে তুলেছিলেন আজ আর কারও জানা নেই !
জানা নেই, কতদূর বিস্তৃত ছিলো এই ঊনকোটি ! কেউ জানার আগ্রহও দেখাননি কোনোদিন !
ঊনকোটিতে এখন যারা যান, তারা দেখে আসেন কিছু ভাস্কর্যের ফসিল আর উলটো দিকের পাহাড়ে একটা চালার নিচে রাখা কয়েকটা মূর্তি ! এসব দেখে, দ্বিতীয়বার যাবার কথা ভাববেন না কেউ ! অথচ চিনিবাগানের দক্ষিণ দিয়ে গেলে পাহাড়ের উপরে যে বিশাল শিবমূর্তিটি আছে, তার গলার সাপ দেখলে, আমার বিশ্বাস, কোনো শিল্পপ্রেমীই ফিরে আসতে চাইবেন না ! ঐ সাপটির চামড়ার যে কারুকার্য তা বিস্ময়ের !
অথবা ঊনকোটির ঝর্ণা বেয়ে নেমে আসা জলজাতলক্ষ্মী ছড়া দিয়ে হেঁটে গেলে যে সকল ছিন্নভিন্ন মূর্তি দেখা যায়, তা এখনও দাবি রাখে গবেষণার !
হায় ! এসব কে করবে ?
পল্লব কিছুদিন কৈলাসহরে ছিলো মহকুমা শাসক হয়ে ! সেও তার আক্ষেপের কথা বললো !
কৈলাসহরবাসী কৈলাসহরেই আছেন, এসবে মন দেবার ফুরসত তাদের আর কই ? পর্যটন নিগম নিগমিত হয়েই আছে, মাঝপথে ঊনকোটি বা পিলাক ধ্বংসই ভবিষ্যত বলে প্রতীক্ষা করছে !
feeling pained.
সত্তর দশকের মাঝামাঝি তখন, জরুরী অবস্থা জারি হয়নি, 11 অক্রুর দত্ত লেন থেকে প্রকাশিত হতো কৃত্তিবাস ! মাসিক পত্রিকা হিসেবে ! সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদক ! কবিতার পাতা দেখছেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়, প্রিয় সম্পাদক ও মিনি বিজ্ঞাপন দেখছেন সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় !
কর্মসূত্রে আমি তখন কৃত্তিবাসের সঙ্গে জড়িত আর মিনি বিজ্ঞাপন-এর পাতার কাজ করছি সন্দীপনদার তত্ত্বাবধানে !
মনে আছে, সেই মিনি বিজ্ঞাপনগুলি হয়ে উঠেছিলো গোপন যোগসূত্রের উপায়, এই যেমন, ক রবীন্দ্রসদনে বিকেল তিনটায় থেকো ! ম !
কাকে বলা হলো কে বললো, বোঝার উপায় নেই, কিন্তু যার বোঝার সে বুঝে গেলো !
মনে আছে, নকশালপীড়িত কলকাতার সেই দিনগুলিতে পুলিশের কাছে এই মিনি বিজ্ঞাপনও হয়ে উঠেছিলো আতঙ্কের, ফলে, বাধ্য হয়ে, পঞ্চানন ঘোষালের মতো ডাকসাঁইটে গোয়েন্দা পুলিশ অফিসারকে ছুটে আসতে হয়েছিলো কৃত্তিবাস অফিসে !
আজ ফেসবুকেও এরকম ইশারাময় ব্যক্তিগত স্ট্যাটাস পোস্ট হচ্ছে, যা কেবল যাকে বলা হচ্ছে, সেই জানে এবং বোঝে, অপরে নয় !
অসামান্য, এই কথাটির ভর ও ভার এত পলকা নয় !
একটি দীর্ঘশ্বাসের জন্ম দেখি তোমার ছবিতে...
সারারাত জেগে থাকার ক্লান্তিও...

আমি তো দরজার পাশে দাঁড়িয়েই ছিলাম !

ভোর হয়ে এলো...
ডাকলে না !
এক বাড়িতে, তাদের বসার ঘরে, সুতো দিয়ে কিছু প্রচলিত বাণী লিখে, কাচের ফ্রেমে বাঁধিয়ে, টা ঙানো এক ফ্রেমে দেখলাম, লেখা আছে সংসার সুখের হয় রমণের গুণে !

চমকে ওঠার আগে, গৃহস্বামী বলে উঠলেন, কথাটা কত সত্য, এখন বুঝতে পারি !

ভাবি, শব্দ কত ভয়ংকর, বিপজ্জনক ! নারীকে রমণী করে তোলা হয়েছে, রমণের স্বার্থে !
আর এখানে রমণীর গুণ নয়, রমণ-মাহাত্ম্যই বর্ণিত !
সম্পর্ক মানে বন্ধন, বন্ধন মানে কিছু শর্ত আর শর্ত মানেই চুক্তি !
নর-নারীর সম্পর্ক যদি চুক্তিরচিত হয়, তা হবে বাজারের, হৃদয়ের নয় ! সমাজ নামক আজব শাসনব্যবস্থা এই বাজারকেই স্বীকৃতি দেয়, হৃদয়কে নয় !

সমস্যা এখানেই !
রবিবার গেলো অর্থহীন...
তবু কিছু ঋণ
থেকে গেলো পরজন্মলোভে

প্রেমে ও বিক্ষোভে !
ভারতীয় সমাজে সেসব দেব বা দেবীই অতিপূজ্য যারা মূলত কামুক...
কৃষ্ণ, শিব, কালী...

বিষয়টা ভেবে দেখার, কেন না, এ দেশে এখনও লি ঙ্গ এবং যোনিপূজার যা রমরমা, বিস্ময় উদ্রেক করে !
মনসা এক লোকদেবী, মঙ্গলকাব্য থেকে উঠে এসেছেন তিনি, মূলত গ্রামবাংলার সহজসরল মানুষের বিশ্বাসরচিত দেবী !
চাঁদ সদাগরের কাহিনীর আড়ালে মনসামঙ্গলও আধিপত্য বিস্তারের এক অনির্বচনীয় চিত্রপট !

Wednesday, August 6, 2014

যা ভাবি, তা লিখি না, যা লিখি তা ভাবি না !
তা হলে, এই দাঁড়ালো, যা লিখি, তা বানানো ! লেখা নিজে লেখককে দিয়ে লিখিয়ে নেয়, বলে, এই সমস্যা দেখা দেয় !
একটা চরিত্রের সন্ধানে যেতে যেতে কত বাঁক পার হতে হয়, তা লেখকই জানেন ! আমার গ্রামের বঙ্ক খুড়ো আমার কোনো লেখাতেই উঠে আসেননি ! অথচ একজন গল্পকারের কাছে লোভনীয় চরিত্র বঙ্কখুড়ো, যিনি সন্ধ্যে হলেই বেরিয়ে পড়তেন জুয়ো খেলতে ! না, ডস্টয়েভস্কির নায়ক তিনি নন, অথচ তার চরিত্রেও নানা ধরণের শেড আছে !
কতবার তাকে লিখবো, ভেবে, বসেছি, পারিনি ! তার বদলে উঠে এসেছেন অন্য কেউ !
তাহলে, এই অন্য কেউ কি মিথ্যা ? বানানো ?
শূন্যের ঝড় গল্পে যে কাপালিক উঠে এসেছিলো, তাকে তো কোনোদিন দেখিনি আমি ! এক আশ্চর্য ঘোরের ভেতর ঐ চরিত্র উঠে এলো গল্পে, যার জন্য অপ্রস্তুত ছিলাম আমি !

লেখা নিয়ে তবু ভাবতে হয় ! মনোজগতের ঐ আলো যদি লেখায় ছড়িয়ে না পড়ে, তাহলে যে মাটি হয়ে যাবে লেখাটা-ই !
বন্ধু কে ?
চাণক্যলিখিত সূত্র মেনে নিতে গেলে, এই যুগে, বন্ধুলাভের সুযোগ আর থাকে না ! আবার ভার্চুয়াল জগতের দিকে তাকালে, সকলেই বন্ধু ! এদের বায়বীয় বন্ধুও বলা যেতে পারে !
বায়বীয় কথাটি বিপজ্জনক, তার বর্শামুখ উদ্যত থাকে নিজের দিকেই ! তবু মজা করার লোভ যাবে কোথায় ? এই বায়বীয় বন্ধুদের একজন সরদার ফারুক, যাকে কোনোদিন চিনতাম না, জানতাম না ! গতবছর, পুজোয়, ঢাকা গেলে, ফারুকই কমলাপুর বাসস্ট্যাণ্ডে রিসিভ করতে এসেছিলো আমাদের, আমার ইলিশপ্রীতির কারণে আটটা ইলিশ কিনে ফেলেছিলো সে ! বায়বীয় থেকে রক্তমাংসের বন্ধু হয়েছিলো ফারুক !
অথবা আমীর চারু ? আজ পর্যন্ত দেখিনি তাকে ! মিশর না কোথায় যেন থাকেন তিনি ! ঢাকা গিয়ে কোথায় থাকবো, এ নিয়ে তার কত দুর্ভাবনা সেবার ! শেষ পর্যন্ত ঢাকার এক থ্রিস্টার হোটেলই বুক করে ফেললেন আমার জন্য ! থাকাখাওয়ার যাবতীয় খরচ আমীর চারুর ! না-দেখা এক বায়বীয় বন্ধুর জন্য মিশরে বসে এতদূর করা, আমার চিন্তার বাইরে !
সুতরাং, বন্ধু কে, এই প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে হতবাক হয়েই থাকি বারবার ! কেন না, যাকে বন্ধু ভেবে উজার করে দিয়েছিলাম কোনো এক সময়, সে-ই আমাকে পেছন থেকে ছুরি মেরেছে, সেই রক্তক্ষরণ এখনও থামেনি !যাকে স্নেহ করেছি অনুজের মতো বা তারও বেশি, তার গোপন কলকাঠির আওয়াজ কানে বাজে এখনও ! তবু সেই আপ্তবাক্যটির শরণ নিই আজও, মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো মহাপাপ ! এখনও বিশ্বাস করি মানুষকেই !
তুমি যেই হও, তুমি জাহান্নম দেখো নাই, আইসো, তোমারে দেখাই ঐ জাহান্নম !
হগ্গলে স্বর্গের কথা কয়, আমি কমু, স্বর্গ বইলা কিছুই নাই, নরকও নাই !
তয় ?
বিন লাদেনরে চিনো ? ওবামা ? পুতিন ? চিনো না ? হামাস না খামাস কয় যে, তারে ?
চেনা চেনা মনে অয় !
চিনবা, চিনবা ! জাহান্নম গেলে হগ্গলরে চিনবা ! মৌলভী, পুরুত, ফাদার সব চেলা ! জাহান্নম চালায় তারা-ই !
ঘর আলাদা, চেহারা আলাদা ! অথচ কাম এক ! লক্ষ্য এক !
মাইনষরে বানানো বোকা !
আইসো, আইসো, জাহান্নম কিচ্ছা হুনতে আইসো একদিন !
শ্রাবণের কথা তুমি বলেছ অনেক,
ধারাপাতহীন রাতে আমিও বলেছি
ঢেউহারা নদীটির শান্ত কথকতা !

অমরাবতীর পথে আমরা চলেছি,
শত শত যুগ ধরে দেখেছি অনেক
রক্তপ্রপাতের স্রোত, আদি তঞ্চকতা

প্রেম এসেছিলো তবু ভিক্ষাপাত্র হাতে
ভুবন হারানো পথে, কথা কয়ে গেছো
তুমি, একা একা, আমি শুধু নীরবতা !
জেনে নিও, জিহ্বা খসে গেছে
ব্রহ্মহৃদয়ের, ছায়াপথ জুড়ে তার
চিহ্ন আছে পড়ে, যেন তারা
ভোরের বকুল, সবুজ ঘাসের 'পরে

এই অন্ধ চোখে, এসব দেখেছি বলে
অভিশাপ দিয়ে গেছে নীহারিকাকণা,
উল্কাপাত ঘটে তবু, সূর্যাস্তের পরে,
ছায়াপতি একা মরে আমার নিভৃত

ঘরে, তাকে বলি, ঘনালো সময় তবে!
ধ্বংস হয়ে যাবে এইঘন ছায়ালোক !
পা বাড়ালাম তোমার কাছে যাবার জন্য এই বেলা,
গোপন কথা রইলো পড়ে জুতোর মতো, স্যাণ্ড্রেরেলা !
হাতের শিরা কেটেছিলাম তোমার জিভে, নখে নখে,
এবার হবে মরণ খেলা পূর্ণমাসীর চোখে চোখে !

তোমার কাছে যাবার জন্য পা বাড়ালাম দশমীতে
উষ্ণতা আজ খুব জরুরী, রুটির মতো, এই শীতে !
আধেক দিও অমাবস্যায় আধেক রেখো পূর্ণিমাতে,
সাজিয়ে রেখো সক্রেটিসের পানপাত্রটি মধ্যরাতে ,
অস্তবেলার গরলশয্যা তোমার তীব্র মোহনাতে...
তোমার কাছে এবার যাবো শ্রাবণ শেষে সন্ধ্যারাতে !
সবুজ গালিচা, উড়ে এসো
আরব্য-উপন্যাসের পাতা থেকে এই
শ্রাবণদশমী শেষে, বদ্বীপ সাজিয়ে
রেখেছে নরম রেশমের ঐ মেয়েটি,
উড়ে এসো যাদুকাঠি হাতে !

ঘন উপত্যকা জুড়ে পরিত্রাহি মাম,
আছড়ে পড়েছে ত্রস্ত ঢেউ,
দুকূল ভাসিয়ে জল একা উঠে আসে অন্ধকারে,

মেয়েটি জানে না, কতদূর যাবে ভেসে মোহনার ঝাউবন, সাজানো বদ্বীপ,
সুনামী যখন আসে কে আর খেয়াল
রাখে ঘরের কাঠামো ?এসো,
সবুজ গালিচা, তাকে তুলে নাও
তোমার উপরে, বিপরীত মুদ্রাযোগে,

এবার রচনা করো দীর্ঘ উপন্যাস !
চলে যাচ্ছো ? যাও !
দরজটা একটু ভেজিয়ে দিয়ে যেও !

এখন আঁধার দরকার,
আমাকে ঘুমোতে হবে ! কতদিন ঘুম
নেই চোখে, অধোজীবনের
পথে এটুকু আশ্রয় থাক !

তোমার সবুজ ব্যাগ নিয়ে যেও, চাবি
রয়েছে সেলফে, ডায়েরিটা
ফেলে যেও না আবার, তোমার সকল
টুকরো টুকরো কথা, জলপ্রপাতের
মত ছটফট, সব রয়েছে ওখানে !

সব নিয়ে যেও
কঙ্কালের মত পড়ে থাকা চিহ্ন সহ

শূন্য ঘরে বড় বেমানান
ঐ সব মুহূর্ত, নিয়ে যেও

যাবার আগে, ঐ দরজাটা...
নীরব তোমার ঘরবাড়ি,
নিকানো উঠোন দিচ্ছে আড়ি
সাঁঝের পুকুর একা একা
ঝিমোয় জলের ত্রস্ত রেখা,

ডেকেছি গোপনে, এসো এসো
সাড়া যে দাওনি ? বুঝি, গেছো
দুপুরের ঘরে চুপি চুপি,
পরকিয়া আজ ক্লান্ত খুব-ই !

মোহন বাঁশিটি কলঘরে,
বোমারু বিমান থরে থরে
তোমার ঘরের সীমানাতে,
দেখেছো, ও নেহা, সন্ধ্যারাতে ?

তোমাকে ডাকছি, শোনো, শোনো
পরকিয়া থাক, অস্ত্র গোনো !

নীরব আমার কথাগুলি
শুনতে পেয়েছে নিত্য ধুলি,
তুমি কি পাওনি, সত্যি, বলো ?
চলো, এইবার, যুদ্ধে চলো !

দুপুরের ঘর ছেড়ে এসো
পরকিয়া সব ছেড়ে এসো !

না-লেখা ডায়েরি থেকে তুলে আনি ভবিষ্যতকথা,
নির্জন স্টেশন, ভেঙে পড়া ডাকঘর,
তুলে আনি আত্মহত্যা, ছল-প্রতারণা,
ঘুঘুদের ডাক, বাঘনখ,
ছাইফুল ফুটে আছে সাদা পৃষ্ঠা জুড়ে,
বাঁ-দিকে নদীর হাতছানি, ঘূর্ণীজলে
ডুবে যাওয়া নৌকোর গলুই, তুলে আনি

তোমার বিবাহকালে এইসব সামান্য যৌতুক
গণবিষাদের লগ্নে দেবো তুলে, নিও !
মাঝে মাঝে নয়, এটা বহুকাল ধরে, আমার, নিজেকে নিয়ে, কিছু উপলব্ধি হয়েছে ! কাউকে বলতে পারি না এই উপলব্ধির কথা !
1. আমি মূলত এক আকাট মূর্খ, আহাম্মকও বটে ! সিলেটিতে যাকে বুরবক বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে আমি তা-ই !
2. আমি অশিক্ষিতও ! ছেলেবেলায় এক ভিক্ষুক বলেছিলো, তোমার কোনো বিদ্যা হবে না ! সেদিন তা স্বীকার করে নিতে না পারলেও আজ টের পাই, আমার কোনো বিদ্যা নাই !
3. আমি আবেগপ্রবণ, অথচ আমার, সে অর্থে, কোনো আবেগও নেই !
4. কাম্যুকথিত আউটসাইডার আমি নই, তারপরও আমি না ঘরকা না ঘাটকা ! শিকড়হীন এক উদ্বাস্তু ! সবখানেই রয়ে গেলাম আউটসাইডার !
5. আমার কাঁধে এক আশ্চর্য মই আছে, যা আমি দেখতে পাই না, অথচ যারা দেখে, তারা এই মই বেয়ে উঠে গেছে অনেক উঁচুতে !
6. আমি সংসারী হতে চেয়ে সংসারী হতে পারিনি, সন্ন্যাসীও নই আমি ! হতে পারার মতো যোগ্যতাই নেই আমার !
7. রসজ্ঞান নেই, শিল্পবোধ নেই, অথচ কলমবাজ হতে চেয়েছি ! এর চাইতে বড় আত্মপ্রতারক কে আছে ?
8. নারী আমার কাছে পরম আরাধ্যা, আরাধনাটাও করা হয়ে ওঠেনি আজও !
9. বন্ধু বলে বুকে জড়িয়ে ধরেনি কেউ, আমিও পারিনি !
10. মা-র স্বপ্ন অধরাই রেখে গেলাম !
লেখাটা পুরোণো, খেলাটাও...
দাহপত্রময় মেলাটাও,

বলিনি তোমাকে ? গোধূলিতে,
শিরা কেটে দেবো, এসো নিতে !

ম্যাজিক জমেছে মঞ্চ জুড়ে
হাততালি আর শিস ওড়ে !

পতাকার নিচে ছিন্নমস্তা
নক্ষত্র ছিলো কি তার হস্তা ?

খেলাটা জমুক, এসো তুমি
জিভ কেটে দেবো, জন্মভূমি,

আমার নীরব মুখরতা !
আমার সরব অচলতা !
দেবো, সব দেবো,
ঘরের কাঠামো
সহ ভিটেমাটি,
পোড়া কাঠ, ছাই,
অস্থি ও মাংস,
এই অন্ধ চোখ,
আব্রুহীন জিহ্বা,
তুলে দেবো হাতে !

লজ্জা, অপমান
প্রভু, দ্রৌপদীর
ছিলো না কখনো !

তুমি জানো সব,
এই বেঁচে থাকা,
মৃতের সমান !
এবার তোমার ঘরে ঢুকিয়ে দিলাম ভাইরাস
এবার তোমার ঘুমেজাগরণে স্বপ্নে ভাইরাস
বিছানায় বাথরুমে আর প্রার্থনায়
ভাইরাস
প্রেমে ও সঙ্গমকালে ভাইরাস

সুখ ও সোয়াস্তি থেকে এবার পালাও
মান ও সম্মান থেকে এবার পালাও
ধর্ম ও সমাজ থেকে রাজনীতি থেকে
মরণ-জীবন থেকে এবার পালাও...
দু-হাতে ভরেছি আজ আকাশনীলিমা
তুমি তার কিছু নাও, হে বালকবেলা !
এই পৃথিবীতে, একদিন, আমি থাকবো না ! এই বেদনা মুছে দিতে চেয়েছো তুমি, তোমার অন্তরের অন্তস্থলে, এজন্যই লিখে রাখো অষ্টোত্তর শতনাম, লিখে রাখো অশ্রু ও পরজন্ম, দু-হাতের তালু ভরে রাখো উষ্ণতা আর বলে ওঠো, বাঁচো...চিতার আগুন, বাঁচো...
হৃদয় টলমলো
বাহির ঝলমলো
বিদ্যুতরেখার মত, চকিত, সে এসেছিলো, আবার কখন গেছে ফিরে, দেবা ন জানন্তি, চিঠি নিয়ে ফিরে আসে চৈত্রের পিওন, ঠিকানা বদল করে চলে গেছে ছায়াপথ ধরে, পাড়ার দাদারা বলে...
এবার শ্রাবণে তাকে দেখি, একা, অস্তাচল পথে, তাকে বলি, সন্ধ্যা, এসো, এসো, অন্তহীন এই ঘরে, রাখো ঐ দুটি পা, জিরোও খানিক,
পৃথিবী বিষাদগ্রস্ত, শিশুদের ঠাঁই নেই, গঙ্গার সন্তান হননের মতো, দেখো,
সকল করুণ দৃশ্য, এই
দৃশ্য গোধূলিরচিত, এই দৃশ্য রাত্রি
পালিত হে...
Never be depressed !
There is LIGHT...
Find it
in your Heart...
গল্পটা যাকে নিয়ে, তাকে দেখিনি কোনোদিন...
অথচ সে আমারই অন্তরবাসিনী, চিরকালের...

এ কথা কি বলা যায় তাকে ?
নন্দনচত্বরে অভাবনীয়ভাবে দেখা হলো তরুণ কথাকার সম্বিত বসুর সঙ্গে, তার আগেই স্কুল থেকে সরাসরি চলে এসেছিলো নন্দিতা ভট্টাচার্য ! সম্বিত আমার ফেসবুকের তরুণ বন্ধু, ভালো লেখে, বলে, অনেকেই আমাকে বলেছেন, দু-একটা বিচ্ছিন্ন লেখা আমিও পড়েছি, তার উপর ভর করে মন্তব্য করা অবিধেয়, বলে, নীরবতার আশ্রয় নিতে হলো, এটুকু বিশ্বাস, সম্বিত অনুধাবন করবে আমার এই অবস্থা !
দেখা হয়ে গেলো দোঁহার-এর কালিকাপ্রসাদের সঙ্গেও ! গৌহাটির ব্যতিক্রম গোষ্ঠীর সৌমেন ভারতীয়, দোঁহার, আসামের ছত্রিয় নৃত্যের অনুষ্ঠান আগামীকাল এখানেই !
তসলিমা নাসরিন আমার প্রিয় লেখিকা বা কবি নন ! তার লেখা আমাকে টানেনি !
তার মানে এই নয় যে, ভারত সরকার তার ভিসার মেয়াদ কমিয়ে দিয়েছে, তাকে সমর্থন করবো ! একজন লেখিকা সরব হয়েছেন পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে, মৌলবাদের বিরুদ্ধে, তার এই বিরোধিতাকে স্যালুট জানাই ! এই কাজ করা দরকার ছিলো আমাদের, আমরা তা করতে পারিনি, এ আমাদেরই দীনতা !
ভারত সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তসলিমার ভিসার মেয়াদ কমিয়ে দিয়ে গণতন্ত্রেরই গলা টিপে ধরছে !
আশা করি, সরকারের বোধোদয় হবে একদিন !
হে নৈঃশব্দ ! হে গঙ্গাঘাট !
ট্রামলাইন ! হে হুজুগময়তা ! মার্বেলগুলি গড়িয়ে যাচ্ছে বাজারের দিকে !
অশ্রুহীন কান্না পাশে পাশে
মাদী বিড়ালের মত এগিয়ে যাচ্ছে...

ভ্রুক্ষেপহীন কলকাতা ! তবুও তোমার ঐ ফ্যাকাসে ঠোঁটে চুমু খেতে এসেছি পুনরায় !
মনে হয়, ভাষা নীরবতারই পূজারী, উচ্চকিত কথা ঢেউ তুলে মিলিয়ে যায়, না হলে, যুদ্ধের হুহুংকার আর রণনিনাদই হয়ে উঠতো অমর !
রাহুল পুরকায়স্থের একক কবিতা পাঠের আয়োজন করেছিলো যৌথখামার, বাংলা একাডেমির জীবনানন্দ সভাঘরে !
গৌতম বসু রাহুলের কবিতা নিয়ে কথা বলার কথা, দেখা গেলো, রণজিত্ দাস কথিত সুন্দর ভূমিকা অনুষ্ঠানের সুর বেঁধে দিলো এক আশ্চর্য তানে !
তিন নারী, তিনজনই নারীবাদী, বসেছে আড্ডায়, আর আমি কাঁচুমাচু হয়ে এক বিছানায় আছি, বলা যায় না, কখন আক্রান্ত হই পুরুষ প্রতিনিধি হিসেবে ! রাত রীতিমতো গভীর এবং নিদ্রাহীন ! আড্ডার বিষয়ও মজার, নন্দিতা নেতৃত্বে, প্রীতি আচার্য ফোড়ন দিয়ে চলছে, মিতালি নীরবে ঠুকে যাচ্ছে তাল !
আমার ভয়ের কারণ কম নয়, লিফটেই একবার আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম, উফ, বেঁচে গেছি ! নারীবাদী হয়েই রাত পার করে দেবো ভাবছি !
এ শ্রাবণ উড়ে আসে দগ্ধ কলরবে
মেলা বসেছিলো সেই কবে
চৈত্রবিকেলের পথে পথে
অস্থি ও কঙ্কালে গান গায় শাস্ত্রমতে !

দগ্ধ শ্রাবণের কাছে পেতেছিলে হাত ?
পোড়ো বাড়িটির চাবিহীন রাত !
আহা ! কেউ যদি স্পনসর করে আমাকে নিয়ে যেতো গ্রীস, প্যারিস, মিশর বা লণ্ডন বা ইটালি, প্রাচীন সভ্যতাকে, একবার,দেখতাম নিজের চোখে !

হায় ! এমন কে আছে আমার ?
স্পনসর করবেই বা কেন ? আমি শালা কে ?
আমি মিঃ পারফেক্ট নই, অন্যরাও পারফেক্ট হবে, এমন আশাও করি না ! এটুকুই বলি নিজেকে, কাউকে যেন ভুলক্রমেও আহত না করি !

তবুও ভুল হয়ে যাই কখনও কখনও, তার জন্য ক্ষমা চাই, প্রতিমুহূর্তে !
দমদম এয়ারপোর্টে বসে, ভাবছি, এই ছিন্নমূল মন নিয়ে, আর কতদূর যেতে পারি ? আর কতদূর অন্তিমবাসর রাত ? অর্থহীনতার এই ভার বয়ে যেতে হবে আর কতদিন ?
এই পথ দিয়ে স্বর্গারোহন করেননি যুধিষ্ঠির, ফলে, কুকুরবেশী ধর্মও পা মাড়াননি কখনও, এক চিলতে রোদ এসে পড়েছে এর গায়ে, যেন এই তার উত্তরীয়, খানিকটা ছায়া মেশানো,এবং রহস্যও, যে রহস্যের ভেতর দিয়ে আমার বেড়ে ওঠা, ছায়াজল ছাড়াই, এ পথে, এগিয়ে যেতে যেতে, দেখি, মেঘ খায় শরীর, নুনহীন মগজ, আর অবদমনের গন্ধ, দেখি, হাঁ করে এগিয়ে আসছে শূর্পনখার ছোটবোন, সেও খাবে ছায়াজল, আর সকল শীতলতা !

এ পথেই তোমাকে খুঁজি হরি পাগলের মত !
রাতে ঘুম না এলে কি করো ? জল খাও ? উঠে বসো বিছানায় ? কিছু ভাবো ? কার কথা ভাবো ? দরজা খুলে বাইরে এসে দাঁড়াও ? নিমগাছটাকে দেখো ? আকাশ ? ঐ ছায়াপথ ?

ঘুম না এলে কি করো ?পাশে যে ঘুমিয়ে আছে, তাকে দেখো ? ঐ হাত স্পর্শ করেছিলো, ভাবো সেই উষ্ণতার কথা ? শীতলতার কথা ভাবো ?

ঘুম না এলে আলপ্রাজোলাম নিতে নিতে ভাবোনি কখনও, এক দুই করে যদি বেড়ে যায় সংখ্যা ও পরিমাণ, যদি বাড়ে, তাহলে এই ঘুম তোমাকে দেবে তার পরম আশ্রয় ?

ভেবেছিলে, তোমাকেও পেতে চায় ঘুম ?
আমার সবকিছুতেই তুমি...
এই সরল কথাটি অনুধাবন করতে একটা লোকের কেটে যায় সমগ্র জীবন, কারও কারও দশ জন্ম পার হয়ে যায়...
বোঝে না বলেই এত লড়াই, এত কলহ, এত আস্ফালন, এত লাদেন এত ওবামা, এত মতবাদ...
তোমার সবকিছুতেই আমি যখন থাকবো, সেদিনই থেমে যাবে পৃথিবীর সকল যুদ্ধ...
ডানদিকে শপিংমল, বাঁদিকে পার্টি অফিস, তারপর চোলাই মদের ঠেক, পেছনে শ্রী শ্রী 108 বাবার আশ্রম, একটু দূরে মসজিদ, এই জায়গা পেরিয়ে, সামনে বাজার, তার পাশ দিয়ে পুরানো গলি, গলির ভেতরে তার ঘর...
এই নির্দেশিকা, এই মানচিত্র, হাতে ধরে, ভাবি, এই তিনি কে ?
বিনোদিনী আর নেই, বিনোদ কি তার কেউ ? সকল প্রার্থনা এসে তবে কেন এখানেই শেষ হয় ?
যে জীবন চেয়েছিলে, তুমি তার পাও নাই কিছু...
মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখি, আসন্ন সন্ধ্যার রঙ, সামান্য নীল মিশে গেছে ঐ প্রখর লালে, যেন অভিমান মুখ লুকোতে চাইছে ক্রোধের আড়ালে, ক্রোধ ক্রমে রূপান্তরিত হচ্ছে অলৌকিক ভালোবাসায়, সন্ধ্যার এই ভালোবাসা বহু জনমের, বহু প্রার্থনার...

আমি আজ সার্থক, সন্ধ্যার এই অনির্বচনীয় রূপ ও ভালোবাসায় মজে থেকে...
ভাষার সৌন্দর্য কোনো লেখাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে ! এই সরল সত্যটি কবি ছাড়া আর কে বোঝে ?
ফলে, বাংলা ভাষার রূপমাধুরী কবি ও শিল্পীরাই অনুভব করেছেন বেশি !
রাত হয়ে এলে ভাবি, দিন গেলো বৃথা
দিন এলে বলি, জেগে ওঠো,সমর্পিতা

তিনটি রাস্তার মোড়ে বসে আছি আজ
কোন পথে গেলে বলবে না জাঁহাবাজ !
প্রাকৃত ভাষায় কথা বলিবার ইচ্ছা, মনে হয়, ইহাতেই প্রাণ আছে !