Thursday, August 6, 2015



সরলরেখাটি যদি আঁকি,
আমার অক্ষম হাতে, সেও
হয়ে ওঠে বাঁকা !
ঐ বাঁকের মোড়ে, একদিন,
দেখা হবে, ভেবে,
বসে থাকি নীল রশি সহ ।
পয়ারের মায়া ছেড়ে
যাব না কোথাও !
মাত্রাবৃত্ত দূর থেকে
হাঁকে, কোথা যাও ?
স্বর বলে, কাজ নেই
সতীনের ঘরে,
আমাকে গ্রামীণ বলে
অবহেলা করে !
বিছানা কাঁপাতে পারি
সঙ্গতে সঙ্গতে !
পয়ার কি জানে তার,
বাঁচে কোনো মতে !
চুপ করে শুনি আমি
স্বরবৃত্তকথা,
সকলই সঠিক তবু
রাত্রিসরলতা
পয়ারের কাছে পাই,
মাত্রা তো গম্ভীরা,
ছল তার পূর্ণ করে
শিরা-উপশিরা !
বুকের ভেতরে স্বর
রাখে এক গ্রাম
কুতকুত খেলা হয়
অবশিষ্ট যাম !
পয়ার জীবন আনে
মরণের দেহে,
স্বর তা বোঝে নাআজ
অতিরিক্ত স্নেহে !
শরীর শরীর চায়, বলে, দেহ খুলে
দিয়েছি শরীর, এই নাও
গভীরে তোমার, বলি তাকে !
সে, শরীর রেখে দেহ দিল
অম্বুবাচি শেষে ।উলুধ্বনি চারদিকে,
এবার তাহলে দিতে হবে
ঝাঁপ, শুরু হোক পূণ্যস্নান !
মাঝখানে, দেয়াল, অদৃশ্য ।
ফলত ফাটল অভাবিত,
চাপা গোঙানির শব্দ, থেকে থেকে
আসছে এপারে ।
দৃশ্যাটি অন্নদা পৃথিবীর...
বৃক্ষ কি দেবতা, শাপভ্রষ্ট ?
নক্ষত্রপুঞ্জের সঙ্গে দুধশাদা পথ
নেমে এসে প্রণাম জানায়...
কাল রাতে এই দৃশ্য দেখে
অন্ধ হয়ে গেছে দুই চোখ !
বৃক্ষটি প্রাচীন, তার ডালপালা
যেন সন্ন্যাসীর জটাচুল !
ধ্যানমগ্ন দুই হাত তুলে
কি প্রার্থনা করে ? কার কাছে ?
হাওয়া বয়, চারদিকে প্রার্থনাসঙ্গীত
নীরব ধ্বনির মত শ্বাস
ছায়াপথ, বুকে তুলে নেয়
তাকে, গভীর আশ্লেষে, যেন
সে পুরুষ তার, ঝুঁকে আছে
তার সামনে আকাশ, নক্ষত্রমণ্ডল !
এটুকুই মনে আছে, এই অন্ধ চোখে
এটুকুই রেখেছি গোপনে !
হারিয়েছি লাল ডাকবাক্স,
তুমি না কি আমাকে আঁকছ ?
চিঠি নেই, কতদিন হল ?
সুদূর আকাশ তুমি, বল ।
আমার ছবিটি খুঁজি রাতে,
ডাকবাক্স ঘোরে কার হাতে ?
(উলটোপালটা কথন)
প্রণয় নিষিদ্ধ হলে কার কাছে যাব ?
দুই হাত রয়ে গেল শূন্য,
চোখ হল অন্ধ এক পাখি,
বধির শ্রবণে আজ অমরাবতীর
রূপ হয়ে ওঠে কাঠবিড়ালীর হাসি ।
কিভাবে নামব আমি মেচেদা স্টেশনে ?
প্রণয় নিষিদ্ধ ট্রেণে চেপে বসে আছি !
ঐ খোলসটুকু, জানি, সত্য ।
শীত পার হয়ে গেলে ভূমিকাসম্বল
এই দেহ পড়ে থাকে, ফিরে তাকাবার
সময় কোথায় ?
ফিরে তাকাতেই হয় কোনো একদিন ।
ততদিনে ঋণ বেড়ে যায়
সুদে ও আসলে, অধমর্ণ বোঝে না তা ।
কুড়িয়ে পেয়েছে দীর্ঘ শ্বাস, সে-ই জানে,
অতিপ্রেম খোলস বিহীন,
দেহ তার আরাধ্য দেবতা । খোলসের
দিকে যেতে যেতে ভোর হয়ে আসে
ঋণগ্রস্ত রাত ।
খোলস ছাড়িয়ে সে জেনেছে এ সত্য ।
বৃষ্টি মানে তুমি,
তুমি ছাড়া এরকম ঝর ঝর ঝর
অসম্ভব, আমাকে ভাসিয়ে
আর কে এভাবে নিয়ে যাবে ?
আমি সেই পথ,
যে পথে আসে না কেউ, আজ
সে পথ ভাসিয়ে নিয়ে গেলে !


একটি হাত পড়ে আছে কবরের পাশে,
দূরে, একটি কাক তাকিয়ে রয়েছে
সেদিকেই, কাটা হাত উঠছে নড়ে, ঐ যে,
আঙুলগুলিও !
আরও দূরে, এক তরুণ চিত্রকর এই দৃশ্য আঁকতে গিয়ে, সে চমকে ওঠে, দেখল, ঐ হাতটি আর কারও নয়, তার নিজের !
অর্থহীনতার দিকে যেতে যেতে
কুড়িয়ে নিয়েছি
খুচরো সে পয়সার মত কিছু অর্থ,
হাত পাতো, সব দেব, শ্রাবণ, তোমাকে ।
উড়ে আসে রাত্রিমথ ঘুমের ভেতর
খুঁটে খায় সকল কলঙ্ক
শরীরের গ্রন্থি সহ ইচ্ছা ও অনিচ্ছা
সব তার খাদ্য, এ হৃদয়
কখন যে খাবে, সেই ভয়ে জেগে থাকি
ত্রস্ত এই ঘুমের ভেতর ।
যা লিখি, নুনের দীর্ঘশ্বাস
যা লিখিনি, তা আমার ত্রাস
সকালে উঠিয়া আমি বলি মনে মনে,
এ ঘর ছাড়িয়া আমি যাইব হে বনে ।
থাকিব পরম ধ্যানে ফেসবুক ভুলি, 
আকাশ আসিবে নেমে দুই হাত তুলি,
তারাগুলি ভাসমান, ছায়াপথ আসে
হৃদয় উথাল করি বাঁধে সর্বনাশে ।।
না-এর তীব্রতা, তার কম্পনমাত্রার পরিমাণ,
যদি হ্যাঁ-এর সমান হয়, জেনে রেখো,
তোমার শরীর থেকে সঙ্গীতের হয়েছিল শুরু ।
নিজেকে, একটু একটু করে খুঁড়তে গিয়ে, দেথি, এই প্রত্নসন্ধ্যা জুড়ে,
তিনি বসে রয়েছেন সিংহাসনে । তার চোখ থেকে বিচ্ছুরিত
সর্পনীল আলো বেরিয়ে আসছে, যার আভায় এই মুহূর্তটুকু, মনে হচ্ছে,
বড় বেশি দীর্ঘ । তিনিই আমাকে শূন্যপ্রভা থেকে রেখেছেন
আড়াল করে । টের পাই, প্রতিটি দিনের শেষে, তার শ্বাস সোঁ সোঁ করে
ধেয়ে আসে এই মুহূর্তের দেশে । তাকে প্রণাম করি, এই নিঃস্ব দিনে,
তিনি আলোকিত করে রেখেছেনন আমার ভেতরের অন্ধকার ।
অস্তাচল থেকে ফিরে এসেছিলাম
তোমার দুপুরে ।
ঘুঘু ডাকছিল।। একা ।
তার ডাক, চরাচর শূন্য করে, ছড়িয়ে পড়েছিল অন্তরীক্ষে ।
এপরিল মাস ।
লোকে বলে, সর্বনাশের মাস ।
দুপুরের এক পাগল, এই এপরিলে,
ঘৃঘুর ডাক শুনতে শুনতে
চলে গেল বৈতরণীর দিকে ।
হাতে, মুঠোভর্তি ছাই।
আর, আমি, কোনো মূল্যবান উপহার নয়,
এমন কি ছাই নয়,
আমার নাভিমূল ছিঁড়ে এসে দাঁড়িয়েছিলাম
তোমার দুপুরে ।
তোমাকে দেব বলে ।
এসে, দেখি, তুমি সেই ঘুঘু, একা একা, ডেকে যাচ্ছ
দুপুরের এপরিলে ।
ভাবতাছি কবিই হমু । 
পাঁচ আনা সেক্স, তিন আনা দর্শন, দু আনা হাহুতাশ, এক আনা স্বপ্ন, দেড় আনা রাজনীতি, আকাশবিদ্যা দেড় আনা, এক আনা প্রেম, আর বাকি এক আনা, না, থাক, ও্টা হাতের তাস, দেখানো যাবে না, এই ষোলো আনা দিয়ে নন ভেজ বা ভেজ কবিতা হয়ে যাবে । যাবে না ?
রোজ, ঘুমিয়ে পড়ি । তার আগে, অপেক্ষা করি তার ।
জানি, একদিন আসবে । তখন জানতে পারব না, যে, সে এসেছিল ।
আজও অপেক্ষা করলাম তার ।
আসেনি সে ।
মানে, মৃত্যু, আমার পরাণসখা ।
এই জীবনের কথা বলিনি কাউকে ।
যে জীবন আমার নয়, তাকেই বয়ে বেড়ালাম এতদিন । 
তার ছায়া গ্রাস করে রাখল আসল জীবনকে । 
এই দুইয়ের মধ্যে চিরশত্রুতা, আর তাদের লড়াইয়ের খেসারত দিতে হচ্ছে আমাকে, যে আমি চাইনি কোনোদিন এই পড়ে পাওয়া জীবন ।
জানালাটা খুলে দাও, হাওয়া আসুক ।
এবার সরিয়ে দাও নাকের ঐ নল ।
নার্স, চোখ দুটি মুছে দাও একবার ।
ঠোঁটের ঐ কষ বেমানান,
হাঁ করা মুখটা ঠিক করে দাও আর
এই পোশাকও ।
মৃতদেহে পোকা ধরবার আগে নিয়ে
যেও কবরে, শ্মশানে নয় ।
পুড়তে আমার বড় ভয় ।
তা ছাড়া সারাজীবন পুড়তে পুড়তে
কাটিয়েছি । আর নয় । কেউ কি এসেছে
দেখতে ? আমাকে ?
কেউ নয় ! ও, হাওয়া, আসুক...
এই বেকারজীবনে আমার সম্বল
বই, ল্যাপটপ, আর এই ফেসবুক !
রান্না করি নিজের খেয়ালে ।
বাজারও করি, দরদাম করি খুব ।
মাছ কিনি ইলিশ বা রুই,
চিংড়ি, ট্যাংরা, পুঁটি ও ফলুই । কিনি
শাক ও সব্জির সঙ্গে কিছু ফলমূল ।
কেনাতে আনন্দ আছে, ফলে, কিনে আনি
সিগারেট, মদ ।
পান-জর্দা নিয়মিত কিনতেই হয় ।
বেকারজীবনে এছাড়া কি আছে আর ?
রাজনীতি, ধর্ম থেকে বড় দূরে থাকি
যেভাবে পাহাড় থাকে দূরে
সমুদ্রের থেকে, দেশলাই কাঠি থাকে
মোমবাতি থেকে বহুদূরে ।
যেভাবে কবিতা থাকে আমার সীমানা
থেকে কোটি কোটি ক্রোশ দূরে ।
কবিতা জানে না, তাকে ছাড়া
আমার জীবন অর্থহীন ।
যাবার সময় হল, এবার বিদায়...
কাকে বলা হল কথাগুলি ?
কাকে ? অন্ধকার
চারদিকে ঘনিয়ে আসছে ।
দূরে নিশীথের আলো, তাকে বলা হল ?
শিরা কেটে বসে আছে মুগ্ধবোধ গান,
নিশ্চল চোখের তারা থেকে
ভেসে আসে রূপকল্পদিন । এই সব
ছেড়ে চলে যাবে, তার প্রস্তুতির
শেষ মুহূর্তের সাথী, বিদায় তাকেও ।
এ পৃথিবী সুখী হোক, বলে, চলে যাচ্ছে
দুটো চল্লিশের শেষ ট্রেন ।
আমাকে ঘৃণা করার হাজার কারণ তোমার আছে, আর তা তোমার অধিকার, সেখানে নাক গলাতে যাব কেন ? বরং ঘৃণা যাতে আরও বাড়ে, তার ব্যবস্থা করতে পারি ।
তাতে যেটুকু ট্যাক্স লাগবে, তা আমারই দিতে হবে । সে না হয় দেব ।
আমি তো আর মহাপুরুষ নই, এই গোটা জীবনটাই মুফতে পাওয়া, সুতরাং চিন্তা করব কেন ?
কলার উঁচিয়ে, শিস দিতে দিতে চলে যাব একদিন !
দু ফোঁটা বৃষ্টির জল, মনে হল, অশ্রু
তোমার ঐ চোখ থেকে বেরিয়ে এসেছে ।
মনে হল, ভেসে যাচ্ছে আকাশ ও গঙ্গা
ভেসে যাচ্ছে সমুদ্র ও ছা্য়াপথ, সন্ধ্যা,
পার্লামেন্ট, গীর্জা
তীর্থক্ষেত্র, পর্যটন কেন্দ্র,
ভেসে যাচ্ছে নরক ও স্বর্গ, বারান্দার
টবগুলি, ইজিচেয়ারের মায়া ।
মনে হওযা সমীচিন নয় ।
তোমার চোখের জল হয়ে যাচ্ছে বৃষ্টি ।
ভেসে যে যাচ্ছিল, তার দুটি চোখ নেই,
কোটরের মধ্যে ত্রাসচিহ্ন
দেখে, উদ্ধারকারীরা মূঢ় আতঙ্কের
মত স্তব্ধ, মুখর কেবল ঢেউগুলি ।
বিপদসীমার থেকে দূরে, এই শান্ত জনপদ
মেতে আছে তর্কসভা নিয়ে ।
ঢেউহীন জীবন তাদের, নিজের লালারচিত
সন্ধ্যাগান থেকে কিছুটা কৌতুক এনে
দিনাতিপাতের পথে হাঁটে তারা । তবু
কেউ যেন নিয়ে এল ত্রস্ত এক দিন ।
ভেসে যে যাচ্ছিল, সে তাদের গতজন্ম ।
ভীম পুরাণের গল্প যার মুখে শুনেছিলাম, তিনি প্রণম্য এক কথক । মহাভারতের গল্পগুলিকে নিজের মত করে পরিবেশন করে যে কথক আনন্দ দিতে পারেন, তিনি তো প্রণম্যই ।
যা নেই, তাকে বাস্তবের কাহিনী করে তোলার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তাঁর ।
আজ, সেই প্রবাদপ্রতিম কথক ধন সিংহকে মনে পড়ছে খুব ।
ফাঁসির বিরুদ্ধে আমি, তা, যে কোনো ফাঁসিই হোক । আগে, শূলে চড়ানো হতো, গিলোটিনে হত্যা করা হতো, গুলি চালানো হতো, এমন কি হাতির পায়ের নিচে ফেলে হত্যা করার পৈশাচিক আনন্দও লাভ করতেন শাসকগণ ।
শাসকের বিরুদ্ধে যারা মাথা তুলেছেন, তাদের আরও নানা পদ্ধতিতে হত্যা করা হতো । হিটলার গ্যাস চেম্বারের ব্যবস্থা করেছিলেন । স্টালিন গুপ্তহত্যার, মাও সে তুং শত পুষ্প প্রস্ফুটিত হোক বলে সকল বিরোধীদের হত্যা করেছিলেন।
সে আলাদা বিষয় । 
অপরাধীর সাজা আমিও চাই, তা বলে, ফাঁসি নয় । অপরাধের মাত্রা বুঝে আরও গুরুতর সাজা দেওয়া হোক ।
বলে রাখা দরকার, আমি যে কোনো হত্যার বিরোধী ।
নগ্নতা জরুরি । সকল সম্পর্ক আজ
দাবি করে নগ্নতার । পোশাকের দিন
শেষ হয়ে এল । এতে জটিলতা বাড়ে ।
পোশাক ভানের অঙ্গ, অথবা আড়াল
করে রাখে মুখ । এই ভেবে,
খুলে ফেলছ পোশাক, খুলে
রাখছ লিসিয়া, ঐ নকল হাসিটিও ।
তখনই, আকাশের তারাগুলি জ্বলে
ওঠে একে একে ।
তাহলে কি শেষ ধর্মযুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে খুব শীগগীরই ?
দীর্ঘদিন নয়, বহুকাল ধরে, এর প্রস্তুতি, কে শাসন করবে এই দুনিয়া ? খ্রীস্টান না মুসলিমরা ? মুসলিম ধর্মে বিরোধীদের ঠাঁই নেই, তারা হয়, মুসলিম হও, না হয়, শির দাও, এতে বিশ্বাসী । অন্তত, মুসলিম ইতিহাস তা-ই বলে । খ্রীস্টানদের পদ্ধতি আর এক রকম, তাদের বিস্তার পদ্ধতি লোভ দেখিয়ে ।
এই দুই ধর্ম আজ মুখোমুখি সম্মুখ সমরে, আর তারা এবার এই ধর্মযুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন আমাদের এই দেশ ভারতবর্ষকে ।
এ দেশের মানুষ বরাবর নিরীহ, শান্তিপ্রিয়, বৌদ্ধধর্মের প্রভাব, চৈতন্যের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি আমরা । উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের আস্ফালনও নেই, তা নয়, বরং প্রকটভাবে তা আছে ।
এই ধর্মযুদ্ধে তাদের অবস্থানই বা কি হবে ? কেউ জানে না, সরকারের ভূমিকাই বা কি হবে ?
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকায়, এই ধর্মযুদ্ধের আভাস দেওয়া হয়েছিল পনের-কুড়ি বছর আগে, বলা হয়েছিল, এটা বিশ্বযুদ্ধের রূপ নেবে । এবং তা হবে ভারতের মাটিতেই, হয় তো, উপমহাদেশ এই যুদ্ধে ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, প্রাণহানি ঘটবে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চাইতে শতগুণ বেশি ।
এই ধ্বংসযাত্রা থেকে কি আমাদের পরিত্রাণ নেই ?
(দয়া করে আমাকে মুসলিম বিরোধী, বা, খ্রীস্টানবিরোধী বলে ভাববেন না । কোনো ধর্মেই আমার বিশ্বাস নেই, ধর্ম অন্ধত্বই বাড়ায়, আলোকিত করে না । এটা বারবার প্রমানিত।)
আমি সেই পাপী যার হাতে
বাজে না সেতার ।
নিঃস্ব জল, হাত থেকে আজ
গড়িয়ে পড়ছে ।
বেদনার মত ।
সহস্র পাপের দায়ে তুমি
আমাকে করেছো অভিযুক্ত ।
আমি তো চাইনি কোনো পূণ্য !
পূণ্যের সমান একটি প্রধান পাপ
ইহজীবনের সঙ্গী হোক ।
নরকের দরজাও যদি বন্ধ হয়
কীটপতঙ্গের দলে থেকে যাবো আমি ।
পাপপূণ্য ছাড়া ।
বেদনার কাছে এতদিন
শূন্যের নিকটে এতদিন
একা থেকে থেকে এতদিন
মরা নদীটির মত ছিলে এতদিন
আত্মনির্বাসনে এতদিন
এবার বন্যার মত ভেসে এসো কাছে
দুকূল ভাসানো স্রোত, এসো।
নিজের কবর খুঁড়ে খুড়ে
এসে পৌঁছলাম রুদ্রভৈরবীর কাছে ।
তিনি, একা, চরাচর আলো করে আজ
বসে রয়েছেন ।
কবর যেখানে, তার পাশে
আকাশগঙ্গার ছন্ন ঘর । লোকালয়
নেই, ভয় নেই, অপমান নেই । তিনি
আমার মুখের দিকে তাকালেন, আর
বললেন, এসো ।
কবর খনন শেষ হলো ?
ফিরিয়ে দেবার আগে দশবার ভাবি,
আসলে কি ফেরাবার মত ?
ভাঙা তালাটির দিকে চোথ
গেলে, দেখি, সেও বলে ওঠে, 
আমাকে ফিরিযে দেবে তুমি ?
ছেঁড়া জামাটিও বলে ওঠে অকস্মাৎ
ফিরিয়ে দিও না ।
মুহূর্তের সুখ, সেও আজ প্রশ্ন করে,
দেবে না কি আমাকে ফিরিয়ে ?
নদীটি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে
সব, অস্থিমাস সহ শ্বাস ও প্রশ্বাস ।
প্রবল ঘূর্ণীর জল, ঢেউ, ঢেউ,
নদীটিও ভেসে যায় অকাল মরণে ।
মুখপাতাটির কাছে ঋণ থেকে গেলো,
ঋণ থেকে গেলো তরুণ কবির কাছে !
জানো তুমি, ঋণীদের স্বর্গবাস নেই !
নরকবাসের কথা ভাববো না আর !
সন্ধ্যার নরম চুলে মুখ গুঁজে আমি
নদীটির ছলচ্ছল বয়ে যাওয়া দেখি
অন্ধের দেখার মত, অনুভূতি দিয়ে ।
ঋণ থেকে গেলো সন্ধ্যা ও নদীর কাছে ।
নিয়তির সঙ্গে সারারাত
অনিদ্রার সঙ্গে সারারাত
সে কি এসেছিল ?
মাঝরাতে তীব্রতম ঝড়
মাঝরাতে বৃষ্টি নামে খুব
সে কি এসেছিল ?
শান্ত হয়ে আসে এই ভোর
পাখিদের ঠোঁটে ঠোঁটে ভোর
এসেছিল তবে !
মরণ যাকে ভেবেছিলাম নিদ্রাহীনের চোখে
আসলে তার আগ্রাসনের তীব্র থাবার বুকে
লুকিয়ে ছিল জীবন নামে অন্ধ একটা পাখি
ছিন্ন ডানায় ভর দিয়ে সে হিসেব করে না কি
হিসেব ছাড়া এই শ্রাবণে কোথায় রাখি জল
দু গাল বেয়ে অশ্রু সুখের অই তো টলমল
মরণ বলে চিনেছিলাম জীবন দিয়ে রাখি
বুকের মাঝে আগলে তাকে সর্বনাশের পাখি
দুহাত ছিল খালি,
নিলাম তুলে বালি ।
এবার তবে পূণ্য ?
বলো না, তুমি, শূন্য !

আমার ভূমিকা নেই, যেটুকু রয়েছে,
তা ঐ কাঠবেড়ালির ! দাঁতে তুলে আনি
অন্ধ ইতিহাস, ছেঁড়া এক মানচিত্র,
অচল কম্পাস ! তুমি এবার তোমার
ম্যাজিক দেখাও, রুটি থেকে বের করো
আস্ত এক রাত্রির মশল্লা !
পাতাগুলি শাদা ।
অথচ ডায়েরি এটা, তা লিখিত, ক্রম
মেনে, তারিখ, সময় সহ ।
রহস্য এখানে । 
উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়ে,
রেখে দিতে দিতে, একবার, সে ভাবলো,
ইশারা কোথাও তবে আছে !
পাতাগুলি শূন্য ।
শাদার বদলে শূন্য তবে কার দিকে ?
হঠাৎ হাওয়ার ফলে, উড়ে গেল পাতা,
সে দেখলো, পাতা নয়, উড়ে যাচ্ছে শব্দ
বোলতার মত ।
হূল ফোটাবার আগে, তার
মগজে বিদ্যুৎ, তীব্র ঝলকানি, আর
মুহূর্তে দরজা গেলো খুলে ।
ইতিহাস অলিখিত, ফলে,
না-লেখা পাতাকে ঘিরে থাকে
জেরুজালেমের মৃত ছায়া !
জেগেছিল ভোরে, সেটুকুই ।
সাপের ফণার নিচে তার
সব উপকথা ।
বাকিটা শ্রাবণ । ঘনঘোর
মনসামঙ্গল ।
লখাইকাহিনী । পুনরায়
উঠে আসে ভোরে ।
জেগেছিল । তীব্র কেশদামে ।
'এই এঁকে দিলাম সীমানা ।
এর বাইরে না । ভেতরে না । '
'কোথায় রাখি পা ?'
'দক্ষিণে ঐ বৈতরণী, উত্তরে ত্রিধারা,
পশ্চিমে ঐ শূন্যকরতল,
পরিসীমা এই এতটুকু ।'
'ত্রিভুজ ? ঐ মোহনার শেষে
জলসহচর । সেখানে পা
রাখবো কি করে ?'
'সে জানি না । শর্তহীন এই শর্তগুলি
মেনে চলো । না হলে, ট্রাফিক
সিগন্যাল পড়ে যাবে তোমার চৌদিকে ।
প্রহরা ত্রিতাল ।'
লক্ষণগণ্ডীর মত পরিসীমা এঁকে দিয়ে, তুমি
বলেছ, এখানে সূর্যোদয়, তারপর,
বাকি পথ মরুতীর্থে গেছে ।
তোমার তর্জনী যতদূর যায়, ততদূর দৃষ্টি
যতদূর দৃষ্টি যায়, সেদিকে তাকিয়ে
দেখি, দলে দলে নেমে আসছে বিষণ্ণ পর্যটক
ক্লান্ত ও হতাশ দিনগুলি ক্রমে উড়ে যেতে থাকে
পরিসীমা থেকে আরও এক আশ্চর্য সংজ্ঞার দিকে ।
রেখাটিকে মুছে দিন আগে ।
রঙ মুছে ফেলে, এবার দেখুন স্বপ্ন
আঁকা হয়ে যাচ্ছে ।
স্বপ্ন আঁকতে এ সব দরকার ।
কল্পনার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই ।
অঙ্কনবিদ্যার এই হলো মুশকিল,
নিয়ম ভাঙার মুখে নতুন নিয়ম
জুড়ে দিতে হয় ।
বোঝাতে পেরেছি ?
না বুঝে থাকলে কাল আবার আসুন ।
সূর্যাস্তের আগে ।
ইন্দিরার জরুরি অবস্থা জারি ইন্দিরাকে ডাইনি বানিয়েছিল লোকচক্ষে, ক্ষমতাগর্বী ইন্দিরার মত মোদিরও অবস্থা, পর্ণ ব্যান করে, সোশ্যাল সাইটে নজরদারি করে, আর যাই হোক, নিজের শিকড় ক্রমে কাটছেন মোদী ।
মধ্যযুগ আর নেই, এই সরল কথাটা উপলব্ধি করা উচিত আর এস এস চালিত বিজেপির ।
নিজের সম্পর্কে যতটুকু জানি, তা সুবিধের নয় । কতদিন ভেবেছি, পালটে ফেলব নিজেকে, হ্যাঁ, আগাগোড়া । পালটাতে গিয়ে দেখি, আমার অস্তিত্ব আর থাকছে না !
বিপদ এখানেই । অস্তিত্ব ! এই শব্দটিকে মুছে ফেলতে পারলে ল্যাটা চুকে যেত । সেটাই পারিনি । পারলে, পালটে ফেলতাম নিজেকে । আমূল । ভালো মানুষ হয়ে যেতাম, অভিযোগের কাঠগড়ায দাঁড়াতে হত না । আসামীর জীবন নিয়ে বাঁচতাম না !
কবিতা শরীরে থাকতে হয়, নিউরনগুলি কবিতায় জারিত থাকে । আমার শরীরে কবিতা নেই ।
টাইমজোন পালটে গেছে সম্ভবত,
না হলে আমার বারোটার সঙ্গে কেন
তোমার বারোটা মিলছে না ?
এই এক মুশকিল, টাইম মূলত
ধারণার এক চরম উদাহরণ, আর এটা
ভুলে যাচ্ছি, বলে, আমাদের
পিছিয়ে পড়তে হয়, বিজ্ঞাপন দেখো,
...না হলে পিছিয়ে...পড়া আছে ?
অর্থাৎ পিছিয়ে নেই তুমি !
ধারণা সরবরাহ করে তারা, কিনে নিচ্ছ
তুমি ক্রেতা, বিক্রেতার মনোপলি মেনে
নিজেকে পালটে নিতে নিতে
একদিন তোমার ঐ সেরিব্রাল হবে
কর্মহীন, টাইমজোনের কথা ঠিক
ভুলে যাবে । বলবে না, আমার বারোটা
তোমার বারোটা নয় । এক হয়ে গেছে
সব, ভেবেও, দেখবে, এক নয় আর ।
তখন টাইমজোন নেই, আমি নেই,
তুমি নেই, রয়ে গেছে শুধু বিজ্ঞাপন ।
সিঁড়ি ভাঙা অংকটির কথা মনে আছে ?
আজ মনে হয় সেই অংকটি, জীবন, তুমি !
দু' লাইন লেখো, এর বেশি
তোমার মুরোদ নেই, কবি, রাত জেগে
বন্যাত্রাণে গিয়েছ কখনও ?
ডুবে যেতে যেতে শিশুটিও
আঁকড়ে ধরেছে যার গলা, সেও এক
মৃত নারী, ভেসে গিয়েছিল প্রবল জলের তোড়ে
অথবা সে বৃদ্ধ, যাকে ফেলে চলে গেছে
তার ছেলেমেয়ে, ডালে বসে
প্রতীক্ষা করছে ত্রাণশিবিরের নৌকো,
আর্ত মানুষের কাছে দাঁড়িয়েছ আগে ?
দাঁড়াওনি ! কি হবে তা হলে এই সব
লিখে ? মাঝরাতে, ঘুম ভেঙে গেলে
চেয়ে দেখো, তুমি নও, তোমার বদলে
আর কেউ লিখে যাচ্ছে অর্থহীন প্রেমের কবিতা !
তাকে বলো, প্রেম নয়, মাঝে মাঝে প্রয়োজন হয়
আর্ত মানুষের সঙ্গ, তাদের বেদনা
আর দীর্ঘশ্বাস থেকে উঠে আসা নগ্ন অভিধান !
জল এসে ধুয়ে দিল বুঝি অন্তর্যাম !
জলের অক্ষরে লেখা তোমার সে নাম
মুছে গেছে তার সঙ্গে, বাকি থেকে গেছে
কিছু চিহ্ন, সুড়ঙ্গলালিত,
লালায় জড়িত আমাদের চুম্বনকাহিনী ।
বিছানার নিচে রাখা সে সব কাহিনী
উই পোকা খেয়ে গেছে প্রবল বর্ষণে ।
রোদে মেলে দিয়ে দেখি কিছু নেই বাকি,
আসলে কি তাই ? তোমার গন্ধের মোহ
লেগে আছে পোকা-কাটা চিঠির অক্ষরে ।
একটি কথাও আর নয় । দেয়ালের কান আছে ।
চারদিকে গুপ্তচর । আমরা এখানে
একটা মিশনে এসেছি । সফল হোক
আগে । তারপর ভাবা যাবে ।
সঙ্কেত খেয়াল রেখো, তিন আর পাঁচ,
মাঝখানে চার নেই । মাঝথানে শূন্য ।
তিন আর পাঁচ মানে যোগ, না কি গুণ ?
মিলছে না ? আরোহী পদ্ধতি মনে আছে?
তার উল্টোদিকে সে রয়েছে ।
গুপ্তধন সহ । কি দেখছো ? ঐ যে, তালা ! পাঁচ থেকে তিন বাদ দাও ।
থাকে দুই । তালাটির ম্যাচিং নম্বর পেয়ে গেলে ?
এবার মিশন শুরু করো ।
মনে রেখো, মিশন সফল হলে হনিমুন ট্রিপ ।