Monday, June 30, 2014

দলে দলে চাকমা শরণার্থী আসছে ওপার থেকে । পার্বত্য চিটাগাঙে নাকি জাতিদাঙ্গা শুরু হয়েছে । জাতিদাঙ্গার মত সর্বনেশে আর কিছুই নেই । সংখ্যালঘুর দায়িত্ব নিতে হয় সংখ্যাগুরুদের । আধিপত্য কায়েমের নেশা চিরকালীন । সংখ্যাগুরুদের মধ্যে এটা বেশিই । অথচ তারা ভুলে যায়, অন্যত্র এই সংখ্যাগুরুরাই হয়ে যেতে পারে সংখ্যালঘু । তখন তাদের উপরও নেমে আসতে পারে সংখ্যাগুরুদের অত্যাচার ।
কোনও দেশেই একারণে অন্তত সংখ্যাগুরুদের এজাতীয় নিপীড়ন করা উচিত নয় ।
সেই বোকা লোকটার কথা মনে আছে ?
যে একা রাস্তার মাঝখানে পড়ে থাকা দেয়াল ঠেলে সরাতে শুরু করেছিলো । দেয়াল কি আর সরে কখনও ? তার মনে হয়েছিলো, দেয়াল না সরালে লোকজনের অসুবিধে হবে ।
বুদ্ধিমান লোকেরা ঐ দেয়াল দেখেও পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছিলো ।
আমি বুদ্ধিমান নই, আজীবন হতে চেয়েছি ঐ বোকা লোকটিই ।
নেশা সকলেই করে । কম বা বেশি । কেউ গাঁজা খায়, কেউ মদ । কেউ আফিম বা ব্রাউন সুগার । সাপের ছোবল খেতেও পছন্দ করে কেউ কেউ । আবার দুধ খাওয়ার নেশাও আছে অনেকের । ধূমপান তো রয়েছেই তার জমিদারিতে । কত ধরনের নেশা যে আছে । শরীরের নেশা আর টাকার নেশা নেই এমন লোক খুব কম । মাতব্বরির নেশাও অনেকের মধ্যে বিরাজমান । পূণ্য কামাইয়ের নেশাও অনেককে উন্মাদ বানিয়ে তোলে । যেমন প্রেমের নেশা । দিবানা বানিয়ে ছাড়ে । তবে এসব নেশায় ব্যক্তি থাকে জড়িত । যদিও প্রেমের নেশায় ধ্বংস হতে দেখেছি ট্রয় । কিন্তু রাজনীতির নেশা ? বড় খতরনাক । সমাজ আক্রান্ত হয় । তিন তাসের চাইতেও সর্বনেশে । অক্টোপাশের থাবা এটা । এই নেশাটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ক্ষমতার নেশা, আধিপত্য বিস্তারের নেশা । আধিপত্যের কথা যখন এলো, তখন মনে এলো ধর্মীয় আধিপত্যের নেশা আজ ধারণ করেছে মারাত্মক আকার । যা জন্ম দেয় ভ্রাতৃবিদ্বেষের । অথচ ধর্ম ও রাজনীতির মোহপাশে আবদ্ধ নব্বুই শতাংশ মানুষ ।
যারা ভালোবেসে মরে গেছে, যারা ভালোবেসে মরছে, আর যারা ভালোবাসবে, বলে, এই পৃথিবীতে আসছে, তাদের জন্য লিখে যাচ্ছি এক দীর্ঘ এপিটাফ ।
এক এক করে খুলে ফেলি এ পোশাক ।
প্রথমে চামড়া । তারপর
হাত-পা, নখ ও দাঁত । নাভিমণ্ডলে ও চুল । আর
এই দুই চোখ । লিঙ্গ সহ
ঘিলু । উপমাবিহীন এই হৃৎপিণ্ড । খুলে ফেলি
শরীরের থেকে । মন, তাও ।

তারপর সব তুলে দিই পাঁচ মন্ত্র সহ প্রাণ ।
নাও, এটুকুই আছে । গ্রহণ করো, হে অন্ধকার
কেউ কেউ হারিয়ে যায় ।
তাদের ঐ হারিয়ে যাওয়া দেখি ।
কোথায় যায় তারা ?
কোনও কোনও দিন দেখি, অন্য গ্রহের আকাশে
উড্ডীন তারা ।
ভুল করে এসেছিল এই গ্রহে ।
হলুদে ও নীলে তারা উড়ছে ঘুড়ির মত অনুভূতিতে
এক স্বপ্নাহতা যখন বাঘিনী.না হয়ে সন্ন্যাসিনী হয়ে ওঠে, আমি দেখি তার.অশ্রুও হয়ে.ওঠে সজল আগুন
নীরব ছিলো ঢেউগুলিও
তোমার তর্জনিতে
মৃত নদীর দীর্ঘশ্বাসের
এসো খবর নিতে...
বিছানাটা খালি, এলোমেলো
বালিশে, তোমার চুল, গত শতকের

আধখোলা জানালার ওপাশে সিল্কের ফিতা, একা,ঝুলে আছে
খাঁচাটা ঝুলছে, শূন্য, খাবারবাটির
জল টলমল

এসব তোমার, বস্তুত আদরণীয়
ধুলি আজ তার বিশ্বস্ত পাহারাদার
তোমার ঊরুকে ভাবি সাদা কাগজের খোলা পাতা,
লিখি তাতে অন্তিম কবিতা
আকাশ, মানে, ঐ শূন্য থাবাটির কথা বলেছি অনেকদিন,
তার নিচে, তাঁবুর ভেতরে
আগুন জ্বালিয়ে, অপেক্ষা করেছি আগামীদিনের,

জানি, সেদিন আকাশে থাকবে না কোনো যুদ্ধবিমানের শব্দ !
যে গাছের ছায়া আছে ভাবি, সে গাছ মূলত আমার-ই মত একা, পত্রপুস্পহীন, গাছ আর আমি আসলে গতজন্মের থেকে পরস্পর একে অপরকে ভালোবেসে এসেছি
সকাল থাকুক একা একা
দুপুর করুক দেখা,
বিকেল যাবে সন্ধ্যাঘরে,
রাত্রি ভাসুক লেখায়
সন্ধ্যা আজ কাঁদছে সারাদিন ধরে, মুখ ভার এখন-ও, অপমানিত শিশুর মত...তাকে বলি, কেঁদো না আর, তুমি কাঁদলে এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে...
I am nobody.
I am nobody.
I am nobody.
But I have a heart...
I have grey matter in my brain.
I have dreams.

so, I write...
do u read it ?
মৃত এই নদীটির বুকে
চাপা দীর্ঘশ্বাস

অন্তরীক্ষলোকে
মাতামহী কাঁদে বারোমাস

নদীটির কথা যদি বলি
বাসের সেতুটি
ফিরে আসে, দেবে না অ ঞ্জলি
চেপে ধরে টুটি

জানে মাতামহী
সকল সম্পর্ক শেষ হলে,
নকুল ও অহি
থাকে জেগে অজিন বল্কলে
ও আগুন, কূটজল, মিহিফাঁস, এসো
তোমাদের লকলকে জিহ্বা মেলে এসো

মরণ-প্রণয় শুরু হোক আজ সমবেত নাচে
বিকেল আসে সেই ঘরে গো
যেই খানে আজ সন্ধ্যা থাকে
বৃত্তের বাইরে থাকতে চেয়েছি বারবার, তবু রচিত হয়েছে নিঃস্বের বৃত্ত !
মুসাকেও মনে হয়েছে চিতাবাঘ ! ক্ষুধার্ত, শিল্পটিল্পের ধার ধারে না !
নিজেকে মনে হয়, ফেরিঘাটে বসে থাকা সেই লোকটা...লোকজন আসে যায়, সে শুধু চেয়েথাকে...
এখন মনে হয়, এই জগত সৃষ্টি হয়েছে বিন্দু বিন্দু অর্থহীনতা দিয়ে আর তা যাতে কেউ অনুভব করতে না পারে, তার জন্য চারদিকে পেতে রাখা হয়েছে নানা ফাঁদ, অর্থ-কাম-লোভ-প্রেম-সংসার-ক্ষমতা ইত্যাদি
কাল যারা মেতেছিল নীরব কলরবে
তাহাদের দীর্ঘশ্বাস ছুঁয়েছো অনুভবে,

তুমি সেই রজকিনী মাতালে চণ্ডীদাসে,
তোমার-ই কথা আজ লিখেছি পরবাসে

বিষণ্ণ নদীটি জানে সে কথা, তুমি কি তা
জানো, মূঢ চপলতা, পুরানো হালখাতা ?
মন ভালো নেই , তন ভালো নেই, বিকেল ও সন্ধ্যার মত আমিও বসে আছি, একা...
রাতের রহস্য লোকে বলে অন্ধকারে, প্রেতের চোখের মত,
কবি জানে, ঐ রহস্য তোমার নাভিতে,
জ ঙ্ঘাস্থলে, ঊরুদ্বয়ে আর
ঐ নিশিবিদ্যুতে
সকল উপমা আজ আছে বসে রেগাবিলাসীর মত হাত পেতে,
এই সকালের হাওয়া ডাক দিয়ে যাক তোমাকে...
তোমার কথা বলেছি কাল ঝুমাকে !
ঝুমা জানে, হাওয়া জানে, সর্বনাশ !
মরণ কাটে ঘুণের মত অন্তর্বাস...
গদ্য ও পদ্যের বা কবিতার মধ্যে যে বিশাল ব্যবধান, তা অনেকেই ভুলে যান, এটা কি অজ্ঞতা না ইচ্ছাকৃত ?
গল্প মানে কাহিনী, এই মান্ধাতা আমলের ধারণা আমাদের কাছ থেকে এখনও গেলো না ! বাংলা গল্প রয়ে গেলো কাহিনীতেই !
মরে যাওয়াও সহজ নয়, আবার আনারকলির মতো মরে গিয়েও বাঁচা যায়, যেমন মীরা...কৃষ্ণ প্রেমে পাগলিনী মীরা বেঁচে আছেন তার ভজনে...
মরে যাওয়াও সহজ নয়, আবার আনারকলির মতো মরে গিয়েও বাঁচা যায়, যেমন মীরা...কৃষ্ণ প্রেমে পাগলিনী মীরা বেঁচে আছেন তার ভজনে...
নীরব তোমার ভাষা, বুঝিলো না হায় কেহ.!
মৃত্যুভাষা লিখে যেতে হবে আজ , আদেশ এসেছে...নৈঃশব্দরচিত এই আদেশ মূলত সঙ্গীত, আর্ত সে, নাদহীন,জড় ়নয়,
প্রকৃত লাজুক, আত্মঘাতী দলিল প্রণেতা,
আদেশ অমান্য করি, সে সাহস নেই, ভীরু আমি, চেয়ে দেখি পরোয়ানা হাসে,
এই হাসি মূলত আমার, ব্যর্থতার,

আদেশনামার কথা কাউকে বলিনি,
মাথা পেতে লিখে যেতে যেতে আমি শুধু
ধরেছি দু-হাত, জীবনের
টুটি চেপে ধরেছি সন্ধ্যার,
আজ আর রেহাই দেবো না তাকে,মুরগীর ছাল ছাড়াবার মত তার
চামড়াও খুলে নেবো,
খুলে নেবো সকল সৌন্দর্য,
স্তন, নাভি, যোনি আর ঐ চোখ খুবলে নেবো

কিছুতেই ছাড়বো না আজ
আগুন ধরিয়ে দেবো তার চুলে
তারপর হৃদপিণ্ড থেকে খুলে নেবো
ভালোবাসা, দেখবো, কত সে ভালোবাসা দিতে পারে বিকেলের ছায়াটাকে !
কেবল ইশারা, কবিতার এই ভাষা
বুঝিনি আমিও, বোঝো তুমি ?বুঝেছিলো
তারা ? দিনরাত মাথা কুটে মরেছিলো যারা
মরুশহরের পথে পথে পদচিহ্ন
রেখে গেছে যারা, বুঝেছিলো কোনদিন ?
জীবন, হাত ধরো... বড়
অন্ধকার এই পথ ...
হে ডানা, হে ছিন্নডানা, ওড়ো, আর একবার, মহাপ্রলয়ের মত ওড়ো,
এই জীর্ণদেশ থেকে
ডানা নেই বুঝি ?
উড়ে এসো তবে !
রবিবার মানেই কি বাজার ?
উফফ্ ! বাজার এখন আগুন !
আগুনের বাসিন্দা তবে আমরা ?
পবিত্র মুখোপাধ্যায়ের এই কবিতার বইটি সেই কবে পাঠ করেছিলাম ! হায় ! আগুন !
সুন্দর, তোমার ডানা থেকে দূরে, আজ
বড় হয়ে উঠছে সূর্যাস্ত

কুপি জ্বালিয়ে সে আছে বসে,
কাগজে অনেক বিজ্ঞাপন, বিদ্যুত লাইন গেছে
অন্তঃপুরে, হায় ! অন্ধকার তবু তাকে
গ্রাস করে, দেখোনি সুন্দর ?
মেঘলা দিনে দুপুরবেলা যেই পড়েছে মনে
চিরকালীন ভালোবাসার বাঘ বেরুলো বনে ...
ঘুম না এলে কি করা উচিত ?মদ্য পান বিধেয় ? না কি, বই পড়া ? না কি পদ্য লেখা ? পদ্য লেখে সদ্য প্রেমে পড়া যুবক-যুবতীরা ! কি করবো আমি ? প্রাণ কাঁদে, একা ! তা হলে, প্রাণের কাছেই যাই...
এসো, প্রাণ, এসো...
তোমার আমার এ মিলনে জগত হোক সুন্দর...
কে লেখে ? আমি তো লিখি না ! তাহলে ? তাহলে লেখে কে ? মাঝে মাঝে টের পাই, আমার ভেতরে কে একজন বলে ওঠে, সাদা পাতাটির সামনে যাও ! বসো কলম হাতে !
অনুলেখকের মত মুখ বুঁজে লিখে যাই তার ডিকটেশনে ! কে সে, যে লেখায় আমাকে ?

Tuesday, June 3, 2014

লেখা মূলত আত্মরতি । নিজেকে নিজের কাছে মেলে ধরার এক পদ্ধতিও বটে । আবার, নিজেকে আবিষ্কারের সাধনাও ।
এসো উন্মাদিনী ,
এসো রাধা-প্রেমে
এসো গ্রীষ্মে , এসো প্রবল একাকী দিনে


একা হয়ে , চারদিকে মেতেছে উল্লাস
শকুনেরা আর নেই , তবু তারা মেতেছে ভাতৃ-নিধনে
ফেরাতে পারি না , উন্মাদিনী , ফেরাও তাদের তুমি
তুমি ছাড়া এ জীবন বৃথা

রচনা করো হে নিজ হাতে এ জগত
আপন মায়ায় , প্রেমে , কবিতায়

শত নামে তোমার অর্চনা করি , এসো তুমি প্রাণে ।
Muhurter kaanta hele poreche ononter ghorer pechone
Merudondo bhaanga, chokhe chhani
Haantute ki jeno kosto, shwaas aase theme, sondhya naame meyetir saathe
Dekha hoy, poraner ghore
Kshoto o bikshoto, kaande, matha rekhe bikeler buke

E drishyo osohoniyo .mone hoy buke dhuke geche
Shunyer neerob chhuri, muhurter kaanta
Digonter maathe pore ache, eka, chhuribiddho, kshoto o bikshoto
Sondhyar chuler kachhe, nijeke bikel bheve, sondhyake joriye...
আকাশে ও কার ডানা মুছে দিচ্ছে আমার অস্তিত্ব ?
ধরেছি সন্ধ্যার হাত, লেখা, যজ্ঞ হোক শুরু, মন্ত
হবে নতুন কবিতা, রজনী লিখিত ।

তোমার ঐ সন্মোহনী বিদ্যা খাতা থেকে টুকে এনেছি গোপনে
ওম ক্লিঙ ফট স্বাহা নিশি সহ জাগে এলোকেশী
আকাশ মিলিয়ে যাক তৃষ্ঞার বাতাসে । এসো, লেখা, ক্রম বিকাশের পথে ।
আমার আনন্দে আনন্দিত যেজন
আমার যন্ত্রণা যাকে কষ্ট দেয়, লেখা, সে তুমিই...
আছে শুধু অন্ধকার মুখোমুখি বসিবার...
আজ কি পূর্ণিমা ? এত আলো ঘরে এলো ?
না কি এলো সে রূপার কাঠি সহ এই হিমঘরে ?

মুহূর্তে উষ্ণতা বেড়ে টগবগ টগবগ আমার ধমনী
মুহূর্তে হলুদ পাতা হয়ে ওঠে প্রকৃত সবুজ

সন্মোহিতা, লেখা, এসেছে আমার ঘরে ।

যজ্ঞাহূতি দিই, নাও এই জেল পেন । ওম্ হ্রীং শ্রীং ক্লীং...
ত্রিপুরায়, কবিদের কি চোখে দেখা হয়, তা মালুম হবে একটি শব্দে । কব্যা ।
এমন তাচ্ছিল্য আর কোথাও কবিকে করা হয়, বলে, আমার জানা নেই । আশির দশকের প্রথম দিকে, আগরতলায় এসে, কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রহৃত হয়েছিলেন, অথচ আমরা দু:একজন ব্যতীত আর কেউ প্রতিবাদ করেননি, বরং মজা উপভোগ করেছিলেন ।
জল নেমে যাচ্ছে
শরীরের খাঁজ বেয়ে, নিচে ।

জলবিন্দু দেখে
অন্ধ এক পাখি এলো উড়ে ।

তার ঠোঁট লাল
জলে নেয়ে চকচকে দেহ ।

জল কি উষ্ণতা দিতে পারে ?
তাকেও গরম করে নিতে হয়, তবে
সে উষ্ণতা দেবে ?

জলের উত্থান চাই, জেগে ওঠা চাই
গীতগোবিন্দদম পাঠ শেষে
নীরব প্রার্থনা বাজে শরীরের কোষে কোষে, শিরা ও ধমনী
জুড়ে, পাখির ডানার গানে ।
প্রবেশমুহূর্তগুলি আলোকিত । শিরা জানে ।
গভীর পরিখা ।
জঙ্গলবেষ্টিত দ্বীপ, সাঁতার ব্যতীত
প্রবেশ কঠিন । এই যুদ্ধ শেষ হলে
তুমি পাবে কার্জন পার্কের মালিকানা ।
জয়-পরাজয় অর্থহীন ।
কেবল সাঁতার । জেনে নিও সাঁতারের
সকল নিয়ম । শিরোপা কার্জন পার্ক ।
লেখা কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে ? যেভাবে যৌবন
চনে যায়, যাবে ছেড়ে চলে ?
পথ বসে থাকে, একা, পথিকবিহীন,
শূন্য ঘাট, শূন্য প্ল্যাটফর্ম চেয়ে থাকে শেষ যাত্রীটির দিকে ।

লেখাহীন আমিও তাকিয়ে আছি শাদা পাতাটির দিকে, একা ।
ত্রিভুজপ্রণালী থেকে দৃরে বসে আছি ।
অতিক্রম করে যাবো, ভাবি ।
সমদ্বিবাহুর টানে ফিরে আসে সমকোণগুলি,
কোণের মায়াবী গন্ধ আসে ভেসে, ক্রমে
মেলে ধরে অতিভুজ, পাপড়ির মত ।
ত্রিভুজরহস্য চেপে রেখে,
এগিয়ে এসেছি, সন্ধ্যা, তোমার নিকটে, মাটির পিদিম জ্বেলে ।

যদি দেখা পাই, পিথাগোরাসের দিব্যি,
ত্রাসহীন স্বদেশ গড়বো ত্রিভুজপ্রণালী জুড়ে ।
এবার, পালটে ফেলবো নিজস্ব পয়োপ্রণালীগুলিও ।
পালটে ফেলবো রাস্তাঘাট, ট্রাফিকপ্রণালী সহ ঐ মানমন্দির,
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলির গণতন্ত্র বোধ আর সহ্য করা যায় না । এবার
সংবিধানের পাতা থেকে মুছে দেবো হিতকর ধারাগুলি ।

বলেছি, আমার কথা মানে এটাই মানতে হবে ।
না হলে প্রস্তুত থাকো আজ
এসপার ওসপার হবে । দেখে নিও ।

আমি চাই সব কিছু চলবে আমার মতে । মানো বা না মানো ।
মৃত্যু অলিখিত । জাবেদা খাতায় নেই তার চিহ্ন ।
যে হিসেব কাটা, তার কোটি থেকে নীল, হালকা ধূসর আলো
বেরিয়ে আসছে থাবা মেলে । নখের পালিশ নেই,
শুধু চকচকে ধার । বাড়িয়ে দিয়েছি গলা । সে কি আর তাতে খুশি ?

পাতা জুড়ে রয়ে গেলো নীল তার সন্ত্রাসের চিহ্ন !

--দ্বাদশঅক্ষর 2009 এর সংখ্যা থেকে ।
বৃষ্টি বৃষ্টি অনাসৃষ্টি ভেতরে তুলকালাম কাণ্ড, লিখেছিলেন কবি শক্তিপদ ব্রহ্মচারী । আজ, এই তুমুল বৃষ্টির দুপুরে, মনে হচ্ছে, আমার ভেতরেও তুলকালাম কাণ্ড চলছে । শুধু কেউ গাইছে না খেয়াল !
বলেছি যেটুকু সত্য, বাকি সব পাঠক জানেন
আমার, সে অর্থে, কিছুই নেই । প্রীতি আচার্য আশ্রয় না দিলে, আমি তো সর্ববহারাই !
তবু আজ আশ্চর্য এক আতংক । শুধু মনে হচ্ছে, কি যেন হারাবো আজ ! সে কি লাজ, সে কি ভয়, সে কি মান, সে কি ভালোবাসা, সে কি স্মৃতি !
জানি না, জানি না । এটুকু জানি, লিখে যেতে হবে আমাকে ।
ফিরে এসো, লেখা । চিৎকার করে বলতে চাই । পারি না ! অনেক আগে, বিনয় মজুমদার নিখে গেছেন, ফিরে এস চাকা । এই প্রবাদপ্রতিম পংক্তির সামনে দাঁড়িয়ে, আমার ঐ চিৎকার অর্থহীন এবং অশোভনীয় ।
লেখাহীন এ জীবন মানে মৃতের জীবন ।
আমি তো মৃতদের জীবন চাইনি ! চেয়েছিলাম, টগবগে এক জীবন যা ভালোবেসে আমাকে দেবে লেখা ।
জোর বৃষ্টি । ঘুম নেই চোখে । গল্প দিতে হবে মন্দিরার কাগজে । কয়েক পাতার পর ন যযৌ ন তস্থৌ অবস্থা । লেখা, লেখা, তুমি কোথায় ?
আজ খুব মনে পড়ছে মা-কে ।
একা আমাকে ফেলে রেখে কোথায় যে চলে গেলো মা, সেই কবে 1995 সালের 5 জুলাই । চিতায় তার দেহ তুলে দিয়ে, তাকিয়ে দেখছিলাম, আগুন তাকে হাভাতের মত গিলে খাচ্ছে । কোনও যন্ত্রণা নেই মা-র ।
সন্ধ্যায় নেমেছিল বৃষ্টি । একটু আগে থেমে গেছে । আকাশে মেঘ ছিঁড়ে উঠে এসেছে চাঁদ । একটু দূরে, শ্মশান বন্ধুরা ওয়ানটাইম কাপে খাচ্ছে মদ । এদিকে আগুন উসকে দিচ্ছে চণ্ডাল । একা, চিতার পাশে দাঁড়িয়ে দেখছি, ছাই হয়ে যাচ্ছে মা-র শরীর ।
কী অবহেলায়, সব ছেড়ে চলে গেলো মা ! ফিরেও তাকালো না !
তুমি কি জানো রে বন্ধু
কান্দালে আমায় বন্ধু কান্দালে আমায় ।
আমার মনের বাউরি বাতাস
কান্দিয়া লুটায় বন্ধু কান্দিয়া লুটায় ।।
মন খারাপ হলে আমি যা করি :
1. নিজেকে খিস্তি দিই পাঁচ মিনিট ।
2. লিকার চা খাই বীট লবণ, লেবু তেজপাতা আদা আর কাঁচা লংকা দিয়ে । এটা উদয়পুর স্পেশাল ।
3. মানিব্যাগ দেখে নিই ।
4. টাকার পরিমাণ মনোমত হলে দেদার মার্কেটিং করি ।
5. দামি মদ কিনে ঘরে ফিরি ।
দূর থেকে দেখি তাকে । যেভাবে আকাশে তারা দেখি ।
নক্ষত্র সে । মৃগশিরা । দুধছাই পথে
যাতায়াত তার । সম্প্রতি ঘটেছে তার অভিষেক ।

আমি তার কেউ নই, আকাশবিদ্যার ছাত্র এক ।
সন্ধ্যার প্রেমিক । গোধূলির পথে এসে
তাকে দেখি, আহত-উজ্জ্বল ।
বর্ষা এক ঋতু মাত্র । ময়ূর পেখম তোলে তবু
এই বর্ষাকালে । ময়ূরীকে মনে পড়ে তার । নাচে ।

ময়ূর-বর্ষার এই সম্পর্কের কথা জানে কবি ।
তুমি সেই লেখা পড়ে থাকো নিদ্রাহীন ।

আর আমি ফুটপাথে ফেরি করে আনি নুন-চাল-ডাল ।
তোমার পুষ্টতা চাই আমার লবণে ।

ময়ূর-বর্ষার মত নয়, শুদ্ধ রাগে, সন্ধি, সমাসে-কারকে
এ সম্পর্ক ভাষার অতীতে ।
বাঙালির অনুষ্ঠানের শেষ নেই । বাজারে গিয়ে জানলাম, বুধবার জামাইষষ্ঠী ।
ফলে, জিনিসের দাম বেড়েছে । ইলিশের দাম এক লাফে দুশো টাকা বেড়ে গেছে । ফলমূলের দাম এরাজ্যে এমনিতেই বেশি । মাছঅলা রসিক । বললো, অটোভাড়ার মত দ্বিগুণ বাড়েনি, স্যার ।
অকাট্য যুক্তি । সরকারের সিদ্ধান্ত ছাড়াই অটো ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণ ।ইউনিয়ন বলে কথা !
ইউনিয়ন না করতে পারে এমন কিছুই নেই এরাজ্যে ।
বাঙালির অনুষ্ঠানের থেকেও তারা অনেক বেশি আদরণীয় এই রাজ্যে ।

ভাতের থালার দিকে চেয়ে থাকি । শাদা শাদা ভাত ।
বাবুদের ভাত । গন্ধ ওড়ে বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে ।

বাবুর অনেক নাম । এলসির নেতা তিনি । দাপট অনেক ।
তিনি আছেন বলেই দু-পয়সা আসে রেগা থেকে ।

ফাউ সেটা । আসলে ঘরের কাজ করি রোজ ।
দিদিমণি না থাকলে ফাউ জোটে বেশি ।
শাদা ভাত, ধবধবে বিছানার সুখ সঙ্গে মোটা টাকা । কখনও বা শাড়ি ।

বাবুর বাড়িতে থাকি । গুণগান গাই । ভোট এলে ভোট দিই বাবুর ইচ্ছেয় ।