Tuesday, May 5, 2015

ঈশ্বরের সঙ্গে পুনরায় দেখা হলো আজ, মন্দিরের গেটে, ভিক্ষাপাত্র হাতে বসে আছেন তিনি ! তার মুখে অন্ধকার, অথচ পায়ের কাছে এসে পড়েছে মন্দিরের আলো !
তাকে দেখে, এগিয়ে যাই, বলি, আপনি ? এখানে ? এভাবে ?
একটু লজ্জা পেলেন যেন, বললেন, এখানেই তো আমার ঠাঁই ! 
তাহলে, ঐ মন্দির...
কথা শেষ করতে দিলেন না তিনি, ওখানে তো কিছু মূর্তি, আর কিছু নির্বোধ লোক ! মন্দিরে আমার ঠাঁই নেই !
কোনো কথা বলতে পারি না, তাকিয়ে থাকি ঈশ্বরের দিকে, বহুদিন স্নান করেননি, উস্কুখূস্কু চুল, চোখে পিঁচুটি !
বললেন, একটা সিগারেট দেবে ?
যৌনতা আনন্দের, তা হয়ে থাকে নারী ও পুরুষের সম্মতিতে, অর্থাত্, যৌনতা শুধু শরীরের দাবি নয়, মনেরও ! 
এই সামান্য কথাটিও যারা বুঝতে নারাজ, তারা পশুরও অধম ! এক পশুও তার সঙ্গিনীর সম্মতি ছাড়া সঙ্গমে লিপ্ত হয় না কখনও !
এই উপমহাদেশে, যেহারে ধর্ষণ বেড়ে চলেছে, তা উদ্বেগের ! এর পেছনে সোসিও-সাইকো কোনো বিষয় আছে কি না আমি জানি না, গবেষকগণ বলতে পারবেন তা ! প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিলে খানিকটা হয়তো প্রতিরোধ করা যেতে পারতো, তাও সম্ভব হচ্ছে না, যারা ধর্ষকের ভূমিকায়, তারা কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের লোক, ফলে প্রশাসনও এ বিষয়ে, প্রায় ক্ষেত্রে, নীরব দর্শক হয়ে থাকে !
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীকে সম্পত্তি ব্যতীত আর কিছুই ভাবা হয়নি, পরিণামে, তাদের উপর নেমে এসেছে মনুসংহিতা থেকে হাদিস, এগুলি যে পুরুষের কায়েমীস্বার্থে রচিত, এ বিষয়ে কারও সংশয় থাকা উচিত নয় !
নারীর পায়ে শিকল পরিয়ে রাখার জন্য পুরুষরচিত এই সকল নির্দেশাবলী অমান্য করতে না পারলে নারীর মুক্তি নেই, আর ততদিন নারীকে যৌনদাসী হিসেবেই দেখবে পুরুষ
আমার এক মাস্টারমশাই তার নামের আগে এবং পরে অনেক শব্দ জুড়ে দিতেন তার নেমপ্লেটে ! নামের আগে দিতেন পণ্ডিত, পরে কাব্যশাস্ত্রী, বিএ অনার্স, বিটি, এমএ (কলি)ইন সংস্কৃত, এমএ (বিএইচইউ) ইন ইংলিশ বিএড...
এটা মূলত নিজেকে জাহির করা, মাস্টারমশাই এই দেখনদারি খুব পছন্দ করতেন !
এখনও এটা আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে, লক্ষ্য করলেই দেখবেন, কেউ কেউ নিজের নামের আগে 'কবি' লিখছেন অম্লানবদনে ! কেউ আবার সাহেবিয়ানা মতে, Poet.
আমার মাস্টারমশাই উদ্বাস্তু ছিলেন, ভাবতাম, তিনি এসব করতেন ঐ উদ্বাস্তু মানসিকতা থেকে, যাকে আমরা বলে থাকি আইডেনটিটি ক্রাইসিস, নামের আগে কবি বা পোয়েট লিখে কি এই ক্রাইসিস থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় ?
বস্তুত সকলকিছু টিকে আছে তোমার ইচ্ছায়...
আমি সেখানে নগণ্য !
কবিতা=পরস্ত্রী
লেখা = পাশের ফ্ল্যাটের মেয়েটি
গল্প = থানার দারোগা
উপন্যাস = পৃথুলা ধনী পরিবারের বিধবা, যে বিজ্ঞাপন দেয় সান্নিধ্যলাভের জন্য
প্রবন্ধ = ক্লাসের ম্যাথটিচার
নাটক = নাক উঁচু পণ্ডিত
কারও সঙ্গে আমার পিরীতি নেই !
এখন আর বিপ্লব দীর্ঘজীবী হয় না, কেন না, সে পেয়েছে ক্ষমতার স্বাদ !
এখন 'দুনিয়ার মজদুর এক হও' উচ্চকিত ঐ শ্লোগানটকেও মনে হয়, ফাঁকির ! হও আর হই-এর এই ফাঁকে ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের রাজত্বও ধরা পড়ে চোখে ! মজদুর মজদুরই থেকে যায়, মাঝপথে দালালদের পোয়া বারো !
এখন পতাকাগুলিকে কাপড়ের টুকরো ব্যতীত আর কিছুই মনে হয় না ! কেবল রঙের পার্থক্য !
তাহলে কি আমিই গেছি পালটে ?
না কি...
অহন ঘুমামু...
তুমি হুদাই জাইগ্যা দেখো
মাইনষে কিতা করে জাইগ্যা জাইগ্যা !
খায়াদায়া কাম নাই, পেটে পড়ে লাথ,
বিয়ানে হুজুর আয়, রাতে আয় নদী,
কি কাম জাইগ্যা থাকি, ডুব দিই তলে..
অহন ঘুমামু আমি তোমার ঐ বুকে,
আদর কইরো, যদি পারো
নদীর লাহান !
এক এক সকালের এক এক রূপ, তার গন্ধও আলাদা ! রঙও আলাদা ! ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে, খুব, পারি না, পারি না, বরং সে আমাকে ছুঁয়ে দেখে, তার হাত আমার শরীরে, স্পষ্ট টের পাই, আর ভাবি, আমিও, এভাবে, পরোক্ষে হলেও তাকে ছুঁই...
আমি তার বুকের উষ্ণতা নিই, সে কি নেয় আমার আবেগ ?
যে ভালোবাসে, সে মূলত দুর্বল চিত্তের, আর দুর্বল চিত্তের লোক চিরকাল কষ্ট পায় ! এই দুনিয়া আবেগের নয়, এই দুনিয়া প্রবলের !
'আমি আছি গিন্নি আছেন আছেন পাড়ার নয় ছেলে...
সবাই মিলে ঘাড় মটকাবো আবার কিছু করতে গেলে !'
নারী নিজেই তার অবমাননার চিহ্ন ধারণ করে গৌরব বোধ করে ! এটাই অবাক করে আমাকে ! শাঁখা নারীকে বন্দিনী করার প্রতীক আর সিঁদুর তো বলাত্কারের সময়কার রক্তচিহ্ন !
মাথা একটাই, তা রয়েছে উঁচু করে রাখার জন্য, কারও পায়ের তলায় নুয়ানোর জন্য নয় !
, আমার ঘরে চলুন, হাঁসের ডিম পাবেন !
মনোয়ারাদের ঘরে যেতে পথে খোকনের সঙ্গে দেখা, মনোয়ারার দেওর, সাদরে আমাদের নিয়ে গেলেন তাদের ঘরে ! 20 টা ডিম কিনলাম 100 টাকা দিয়ে, সঙ্গে কুমড়োর ডাটা ! আমাদের দেখে আশেপাশের মহিলারা জড়ো হলেন, হঠাত্ দেখলাম একটা 10/12 বছরের মেয়ে 6 টা হাঁসের ডিম নিয়ে হাজির ! অগত্যা তার ডিমগুলিও নিলাম কিনে !
ফেরার পথে ঐ খোকনই এলো আমাদের প্রধান সড়ক পর্যন্ত এগিয়ে দিতে !
ঘরে এসে মনে হলো, রাজনীতির অপচ্ছায়ায় থেকেও গ্রামে এখনও রয়ে গেছে সেই সরলতা !
Like · Comment · 
আকাশ আজ ক্রোধে গর্জন করছে, তার গর্জনে কেঁপে উঠছে বহুতল বাড়িগুলিও...
আমি তো মানুষ, এবং ভীতু, বিদ্যুত দপ্তরের মত ! কাঁপছি !
এই নাও মদ, মৈথুনের আগে
এই উপচার,
মাংস ও মুদ্রা, দেবি, নাও,
মত্স্য পুরাণ পার হয়ে
এসো, বিপরীত আসনে তোমার
অধিস্থান হোক...
শৃঙ্গার ব্যতীত এই পূজা অসম্পূর্ণ,
চুম্বনের মত মন্ত্রপাঠ,
ওম্ ক্লীং শ্রীং ফট্ স্বাহা
মূলত লেহন, জেগে ওঠো
প্রাণে, জাগো, দেবি,
বিপরীত আসনের থেকে
সঞ্চালিত মুদ্রা, ধীর থেকে
ক্রমে অধীরা তোমারবিস্ফারিত রূপ
একবার, সকল শব্দের
শেষে ফুটে ওঠুক পদ্মের মত লালে
এই নাও দেহ,
মন ঝরে পড়ছে তরলে
নাও, নাও আর পূর্ণ করো
ভাসাও প্লাবনে !
ঐ ডানা খসে পড়লে
তোমাকে মনে হবে আমার মা !
--উত্সর্গপৃষ্ঠা থেকে
এক.
যেদিকে সূর্যাস্ত হয় তার উল্টোদিকে আজ মোরগলড়াই
ধুলি ওড়ে মাঠ জুড়ে, সঙ্গে নীল ছাই !
আমি তার কিছু হাতে নিয়ে এসেছি তোমার কাছে,
যদি মৃত মোরগটি কোনোক্রমে বাঁচে !
যদি তুমি দাও তাকে এ যাত্রা বাঁচিয়ে,
কিছুদিন আরও যাবো ঘোলা জলে মানুষ নাচিয়ে !
নশ্বরতা, লাল ঝুঁটি মোরগের দোসর তুমিও,
সূর্যাস্তের দিকে এসে লড়াই থামিয়ে চাই অরণ্যভূমিও !
(চান্দ্রমাস-এ প্রকাশিত)
দূরত্ব ভৌগোলিক হলে বিপদের কিছু নেই, দূরত্ব যদি মানসিক হয়, তা বিপজ্জনক !
বহুগামিতার পথে এসে, একদিন,
তুমিও চেয়েছো
এক নায়কের মত প্রবল ক্ষমতা,
বহুগমনের এই দোষ,
তার চেয়ে, মনে হয়, সেই দিনগুলি
ভালো ছিলো বেশি !
কৌম মতে, প্রবীণ বুদ্ধের
মত অনাসৃষ্টিহীন, নিরাসক্ত
বজ্রযাত্রী হয়ে,
মাতৃগমনের পথে,একা, চলে যাওয়া
সেও বড় দোষ,
সেখানেও তুমি হতে চাও
কণিষ্কের মত, নিরঙ্কুশ
কখনো ভাবোনি, ক্ষমতা একার নয়
বরং তা যৌনতার মত
একে অপরের সুখে পূর্ণ হতে থাকা
ছায়া থেকে সরে গিয়ে তুমি
পুনরায় ছায়ার সন্ধানে
কাটিয়েছো ভাদ্রের দুপুর,
প্রবল ঝড়ের মুখে উড়ে গেছে ছাদ
জানালার কাচ
ঘরের সিলিং ভেঙে ছারখার হলে,
ভেবেছো, নিয়তি
কেন বাধ্যতে ? কি দোষ নিয়তির,
নিজ হাতে সরিয়ে দিয়েছো
ছায়া, অপার্থিব বৃক্ষ থাকে
গোপন সিন্দুকে,
সে কথা বলেনি কেউ ? না কি
সব ভ্রম ? ছিলো না ছায়াও ?
একা, অন্ধকার ঘরে, তুমি
কি করে ছায়াকে পাবে আজ
শূন্য করতলে ?
যে পথে এসেছি চলে সেই পথ
তমসার ঘর আলো করে
চলে গেছে দ্রুত পায়ে জঙ্গলমহলে
পুরনো বন্ধুরা বলে, চলে এসো, ভ্রান্তি থাক পড়ে
ধূ ধূ মাঠে, অন্তরীক্ষে,শূন্যেজলেস্থলে
শুদ্ধিকরণের পথে, ছিন্নজিহ্বা,
ফিরে এসো আমাদের দলে !
(চান্দ্রমাস-এ প্রকাশিত)