Saturday, January 3, 2015

চতুর্থপতি অষ্টমে, বন্ধুভাগ্য নেই, অবিদ্যার সন্তান, এটুকু জানার পর, নিজের প্রতি ঘৃণা ও মায়া ভিন্ন আর কিছুই প্রকাশ করতে পারিনি ! এই মায়া থেকে জন্ম নেয় এক ধরণের আত্মদ্রোহ, আমার প্রতিটি লেখা ঐ আত্মদ্রোহের ফসল, নিজেকে দশদিক থেকে দেখার এক উপায়ও বটে !
হতে পারতাম হোটেলবয় থেকে খানসামা, তার বদলে যা হয়েছি, তা মঙ্গলের অবদান, শনিরও ! নবমপতি শনি, তুন্গী এবং সে এখানে বিবেকের ভূমিকায় ! ভুল করলেই দ্বিগুণ শাস্তি দেয় সে !
এসব জাতচক্রকথা, কিন্তু কবিতা লিখতে এলাম কেন ? না কি, যা লিখি, তা কবিতা-ই নয় ?
এই সংশয় থেকে, কবিতার হাত ছেড়ে দিয়ে, একদিন, হাত ধরি গদ্যের, মানে, কথকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হই, এই গল্প লেখার সাহসও যুগিয়েছেন ভাস্বতীদি, ভাস্বতী রায়চৌধুরী, 1975/76-এ থাকতেন টালিগঞ্জে, চারুচন্দ্র মার্কেটে, বের করতেন অহংকার নামে এক সুন্দর কাগজ ! এই অহংকার-এ প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় আমার, নাম, পরী !
মজার একটা ঘটনা, এ প্রসঙ্গে, মনে পড়ে গেলো, পরী পাঠ করে, প্রচণ্ড খেপে গিয়েছিলেন পীযূষ রাউত, আমার লেখালেখির শুরুর দিনগুলিতে তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছিলাম ! এতটাই খেপলেন যে, কুড়িবছর আমার সঙ্গে কথা বলেননি আর ! অবশ্য আরও কিছু কারণও ছিলো এর পেছনে !
প্রথম উপন্যাস লিখি সমতল নামে ত্রিপুরার এক কাগজে, অমিয়ভূষণ মজুমদার, এই কাগজের শারদীয় সংখ্যায় উপন্যাস লিখবেন, বলে, ঠিক হয়েছিলো, পত্রিকা প্রকাশের সাতদিন আগে, তিনি জানালেন, লেখা শেষ করতে পারেননি এবং তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন, দিতে পারবেন না বলে ! আর একটি উপন্যাস ছিলো কবিতা সিংহ-এর !
দুটি উপন্যাসের স্থলে একটি মাত্র উপন্যাস, তা কি করে হয় ? সুতরাং আর একটি উপন্যাস চাই ! এত কম সময়ে, কে লিখবে ? অগত্যা, আমাকেই বলা হলো, লিখে দিতে হবে !
তিনদিনে লিখি ঐ উপন্যাস, লেখার প্রতি, নিজের প্রতি এমন অবিচার আর বোধ হয় করিনি কখনও !
এরপর থেকে, প্রায় নিয়মিত গল্প ও উপন্যাস লিখতে শুরু করি ! অনেকেই বলেছেন, উপন্যাসের কোনো শর্ত না কি থাকছে না আমার এসব লেখায় !
শর্ত মানার লোক আমি নই !
লিখি মায়া থেকে, অবিদ্যার সন্তান আমি, শর্ত মানবো কেন ?
2005 সালে, উপন্যাসিক শৈবাল মিত্র, আজকাল-এর উত্তরসম্পাদকীয় লিখলেন আমার এক উপন্যাস নিয়ে !
ট্রা রা রা রা ! উপন্যাসটির নাম !
তিনি লিখলেন, লাতিন আমেরিকায় বসে মার্কোজ যে ম্যাজিক রিয়েলিজম নিয়ে মেতেছেন, তার চাইতেও বেশি কাজ হয়েছে এই উপন্যাসে ! মার্কোজের সঙ্গে তুলনা করেই থেমে থাকলেন না তিনি, উত্তরসম্পাদকীয় শেষ করলেন, সমরজিতের লেখা বা ঙালী লেখকদের ঋদ্ধ করুক, বিদ্ধ করুক পাঠকদের !
এটা পাঠের পর প্রচণ্ড সংকোচে পড়ি আমি !
এটা কি আমার লেখাকে ব্যঙ্গ করে লেখা ? না কি পিঠ চাপড়ে দেওয়া ?
আর কেউ আমার এই উপন্যাস নিয়ে উচ্চবাচ্চ্য করেননি!
হায় চতুর্থপতি !

No comments:

Post a Comment