Saturday, October 5, 2013

অতিজীবিত, একরাম আলির কাব্যগ্রন্থের নাম । সেই নাম ধার করে, আমি লিখতে শুরু করেছিলাম এক উপন্যাস, যার প্রথমপর্ব প্রকাশিত হয়েছিল পল্লব ভট্টাচার্য সম্পাদিত 'উত্তরপুরুষ' এর প্রথম সংখ্যায় । দ্বিতীয়পর্ব প্রকাশিত হয় সমীরণ রায় সম্পাদিত 'ত্রিপুরা দর্পণ' শারদীয় সংখ্যায় ।
উপন্যাসটির পরিণতি কি হবে, তা নিশ্চিত নই, বলে, আমি বাকি পর্বগুলি লিখতে পারিনি । এই উপন্যাসটি বিদ্বজনদের নজর কেড়েছিল, বলে, সামান্য দুর্বলতাও রয়ে গেছে উপন্যাসটির প্রতি ।
উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র দুটি, সময় আর পরী ।
এই পরী, বারবার, ঘুরেফিরে এসেছে আমার লেখায় । 'হননমুহূর্ত' নামে আমার এক গল্পগ্রন্থের শেষ গল্পটিতে, পরী এসেছে । সেই পরীকে পুষতেন এক লোক । পরী ধরার গল্প আমাদের পরিবারে চালু আছে দীর্ঘবছর ধরে । আমার মা-কেও না কি, তার ছোটবেলায়, ধরে নিয়ে গিয়েছিল পরী । পরে তাকে খুঁজে পাওয়া যায় ১৭ মিঞা হাওরের মাঝখানে যে ঘন বেতঝোঁপ, তার মাঝখানে, বালিতে স্নানরত অবস্থায় ।
আমার সকল স্বপ্নে, পিতৃ-মাতৃসূত্রে চলে এসেছে পরী । আমার এই অভিশপ্ত জীবন আসলে এক পরীকথা, যা থেকে নিস্তার নেই আমার ।
আমার মা নিজেই ছিলেন এক পরী । তার দুটি ডানা ছিঁড়ে রেখেছিলেন আমার জন্মদাতা । নৃত্যশিল্পী হতে হতে, ছিন্নডানা আমার মা, পুরুষতন্ত্রের বলি হয়ে, মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন একসময় । সে ছিল সাময়িক । তারপর, সব অগ্রাহ্য করে, এই পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়ে, পেরেছিলেন নিজ পায়ে দাঁড়াতে ।
পরী সব পারে, এই ধারণা মা-র মগজে যিনি ঢুকিয়েছিলেন, তিনি মা-র শ্বাশুড়ি । আর তিনিই আমার মাথা খেয়েছিলেন চিবিয়ে । তিনিই, মৃত্যুর প্রাক-মুহূর্তে, তর্জনীসংকেতে জানান, পরী বিনা গতি নেই আমার ।
প্রীতি আচার্য জানেন আমার এই পরীকথা । তাকেও, আজ, মনে হয় সেই ছিন্নডানা পরী ।

No comments:

Post a Comment