Tuesday, November 25, 2014

শক্তি চট্টোপাধ্যায় আসছেন !
এই একটি বাক্যে, শিলচর শহর, সেদিন, উত্তাল হয়ে উঠেছিলো প্রায় ! কাছাড় বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন ছিলো জেলা গ্রন্থাগারে ! আগের দিন এসেছিলেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, মাতিয়েও গেছেন কবিতাপ্রেমীদের !
কিন্তু শক্তি চট্টোপাধ্যায় আলাদা !
আমি তখন বাড়ি-পালানো ছেলে !
কবিতা লিখি, এই গর্বে, শিলচরের মাটিতে যেন পা পড়ে না আমার ! মিথিলেশ ভট্টাচার্য, তপোধীর ভট্টাচার্য, শেখর দাশদের সঙ্গে শতক্রতু নিয়ে মেতেছি, রাত কাটাই মিথিলেশ-এর পাশের বিছানায়, দু-বেলা খাই তপোধীর ও তার বোন অদিতির সৌজন্যে ! আর দৈনিক প্রান্তঃজ্যোতির সম্পাদকীয় লিখি, রবিবারের পাতা সম্পাদনা করি !
শক্তি চট্টোপাধ্যায় এলেন দুপুরের ফ্লাইটে, মুড অফ, সার্কিট হাউসে, তাকে ঘিরে অনেকেই, কারও কথার জবাব দিচ্ছেন না তিনি !
কবি কি এমনই হয় ?
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তো সবার সঙ্গে কথা বলেছেন, তবে মেপে মেপে ! শক্তি চট্টোপাধ্যায় তাহলে কথা বলছেন না কেন ?
শক্তিপদ ব্রহ্মচারীও থ হয়ে আছেন ! কি করবেন বুঝতে পারছেন না ! হাইলাকান্দি থেকে এসে ব্রজেন্দ্রকুমার সিংহ, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কানে কানে , কি যেন বললেন, হো হো করে হেসে ওঠলেন তিনি !
মনে হলো, চার বছরের কোনো শিশু হাসছে !
সন্ধ্যায়, মঞ্চে উঠে, বই ছাড়াই তিনি যখন 'তীরেতে প্রচণ্ড কলরব' পাঠ করতে করতে, হঠাত্, সমগ্র গ্রন্থাগার কাঁপিয়ে, বলে উঠলেন, আমি স্বেচ্ছাচারী...আমার শরীরের রোমরাজি শক্তি শক্তি করে উঠেছিলো !
কবিতার পুরুষ তিনি, তাঁর সান্নিধ্যে না এলে, কবিতার অন্দরমহলে প্রবেশ করতে পারতাম কি না, সন্দেহ আছে আমার ! শব্দ নিয়ে এমন পাগলামি বাংলা কবিতায় খুব কমজনই করেছেন ! মেদিনীপুর মানে মেদিনী দুপুর, আর দুপুর মানে দুখান বুক...এভাবে, ধীরে ধীরে মর্মমূলে যাওয়া, তাঁর পক্ষেই সম্ভব !

No comments:

Post a Comment