Monday, August 26, 2013

চিরকাল নারী তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পুরুষের বিরুদ্ধে । আজ তার মাত্রা বেড়েছে বহুগুণ । অথচ তা হ্রাসমান হওয়া বিধেয় । কেন না, শিক্ষার হার বেড়েছে শতাংশের হিসেবে । তা যে হয়নি, তার প্রমাণ পাই অহরহ, ব্রেকিং নিউজ আর খবরের কাগজে । ফলে, পুরুষের বিরুদ্ধে নারীর ক্ষোভ যথার্থ ।
প্রাক-আর্যযুগে, ভারতবর্ষে, নারীর সঠিক অবস্থান কি ছিল, তথ্যগতভাবে, তা এখনও অস্পষ্ট । কিছুটা কুয়াশাচ্ছন্নও । কিন্তু আর্যদের আগমণের পর থেকে, এদেশে, ব্যাপকহারে, শুরু হয়ে যায় নারীলুণ্ঠন ও অবাধ ধর্ষণ, যার প্রমাণ পাই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে । এই নারীলুণ্ঠন শক-হূণদল হয়ে পাঠান-মোঘল অবধি ছিল বিস্তৃত । অর্থাৎ নারী সেকালে ছিল লুণ্ঠনসামগ্রী ।
রাক্ষসবিবাহ, বলে, একটি বিবাহপ্রথাকে তো যথারীতি স্বীকৃতি দিয়ে বসে আছে হিন্দুবিবাহশাস্ত্র, যা মূলত ধর্ষণজাত বিবাহ । এই লুণ্ঠন বা ধর্ষণের চিহ্নগুলিকেই পরম পবিত্র, বলে, আজও ধারণ করে আসছে নারী । তা হল, মঙ্গলসূত্র, শাঁখা-সিঁদুর, নূপুর বা মল, ঘোমটা বা হিজাব । লুণ্ঠনের পর, নারীকে বেঁধে রাখা হয়েছিল, লোহার বেড়ি দিয়ে । গলার বেড়িটিই মঙ্গলসূত্র, হাতের বেড়ির নাম শাঁখা, পায়ের বা কোমরের বেড়ি হল নূপুর বা মল । অপরদৃষ্টির আড়ালে লুণ্ঠননসামগ্রী সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে ঘোমটা বা হিজাবের প্রচলন । আর, সিঁদুর ? প্রথম সঙ্গমের বা সতীত্বহরণের উজ্জ্বল নিদর্শন ।
পুরুষতন্ত্রের এই অবমাননাকর ভুমিকা এখনও অব্যাহত । এটা নির্মূল হোক ।
মুশকিল হল, পুরুষের আধিপত্যবাদ যতদিন টিকে থাকবে, নারীধর্ষণ বা নির্যাতন, নারীকে অবমাননাকর অবস্থানে রাখার প্রক্রিয়া বন্ধ হবার নয় । ৫০ শতাংশ আসন নারী ক্ষমতায়ণের নামে সংরক্ষিত করা হলেও রাজনৈতিক দলগুলিতে লক্ষণীয়ভাবে দেখা যায় পুরুষপ্রাধান্য ।

এ আসলে পুরুষতন্ত্রের গূঢ় খেলা । মজার বিষয় হল, এই পুরুষতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে সবচেয়ে আগ্রহী ঘোমটা-হিজাব পরিহিত, মঙ্গলসূত্র-শাঁখা-সিঁদুর-চুড়ি-বালাশোভিত নারীরাই ।
এই স্ববিরোধ দূর হোক আগে ।

No comments:

Post a Comment